বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে ডুবন্ত সুন্দরবনে গোদের উপর বিষফোঁড়া নিয়ে হাজির হয়েছিল আমফান। আর সেই আমফানে তছনছ হয়েছে সুন্দরবন সহ বাঙলার একাংশ। ঠিক যেমন হয়েছিল পল্লবী নামের এক কিশোরীর সাথেও। স্কুল থেকে ফিরে নিজেদের চায়ের দোকানে সাহায্য করতো, আমফান বিদ্ধস্ত সেই দোকান, বাড়ি, গ্রামের দিকে অসহায় হয়ে তাকিয়ে থাকা এই কিশোরীর ছবি তুলে ইউনিসেফ থেকে “ফটো অফ দ্য ইয়ার ২০২১” খেতাব জিতে নিলেন বারুইপুরের সুপ্রতিম ভট্টাচার্য।
সুপ্রতিম ভট্টাচার্য, যিনি গত বছরেও ইউনিসেফ থেকে ফটো অফ দ্য ইয়ার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন। সুপ্রতিম ফিল্মমেকিংয়ের পেশা ছেড়ে পুরোপুরি ফটোগ্রাফিতে মনোনিবেশ করেন। আর সেটা উনি বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য ডুবতে থাকা সুন্দরবন থেকে শুরু করেন।
উনি বলেন, “যখন আমি ফিল্মমেকিং ছেড়ে ফটোগ্রাফিতে আসি, ক্যানন ৫ডি মার্ক-৩ সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি জলবায়ুর পরিবর্তন দেখতে। আমার ছোটবেলার দিন অনেকটা কেটেছে সুন্দরবনে কাকার বাড়িতে, যিনি আমাকে একটা কোডাকের ক্যামেরাও উপহার দিয়েছিলেন, যা দিয়ে সুন্দরবনেই প্রথম সূর্যাস্তের প্রথম ছবি তুলেছিলাম।”
বিশ্বব্যাপী শিশুদের মানসিক এবং আবাসিক অবস্থা নিয়ে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বব্যাপী হাজার ছবির মধ্যে দ্বিতীয় অধিকারীও একজন বাঙালী। সৌরভ দাস, যিনি লকডাউনে শিশুদের পড়াশোনায় যে প্রভাব পড়েছে, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তার ছবি তুলে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।
ইউনিসেফ থেকে স্বীকৃতি পেলেও সোস্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরেছেন। তাদের অভিযোগ ভারতের দুর্দশা বিশ্ব দরবারে তুলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। যদিও বেশিরভাগ মানুষ এই সাফল্যে খুশী, তারা মনে করছেন, দেশের, জনগণের অবস্থা তুলে ধরা সাংবাদিক বা ফটোগ্রাফারের কর্তব্য আর সেটা শুধরে নেওয়ার দ্বায়িত্ব সরকারের।