কবি - TDN Bangla
  • About Us
  • Privacy Policy
  • Contact Us
Wednesday, May 21, 2025
  • Login
No Result
View All Result
TDN Bangla
  • হোম
  • রাজ্য
  • দেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়
  • হোম
  • রাজ্য
  • দেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়
No Result
View All Result
TDN Bangla
No Result
View All Result
ADVERTISEMENT

কবি

Umar Faruque টিডিএন বাংলা
December 7, 2024
| সাহিত্য ও সংস্কৃতি
মুহাম্মদ জিকরাউল হক

মালদা কলেজ গেট থেকে বেরিয়ে পোস্ট অফিসের দিকে যাচ্ছি। হাত ধরে আছি কবির। আমরা দুজনই মালদা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। ভালো বন্ধুও। এক বন্ধু অন্য বন্ধুর হাত ধরে হাঁটবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাঁধ সাধল কবি। বলল, “হাতটা ছেড়ে দাও।”

“কেন?” আমি জিজ্ঞেস করলাম হাসতে হাসতে।

সে বলল, “আশেপাশে অনেক সাংবাদিক আছে। দেখে ফেলবে।”

আমি বিস্ময় প্রকাশ করে বললাম, “দেখলে কী হবে?”

কবি বলল, “জিজ্ঞেস করবে, আপনার সঙ্গে যে ছেলেটা হাত ধরে হাঁটছিল সে কে হয়? আমি কী উত্তর দেব তখন?”

“বলবে যে আমার বন্ধু হয়। এক সঙ্গে পড়ি।”

সে কোন উত্তর না দিয়ে তার হাতটা আমার হাত থেকে ছাড়িয়ে নিল। আমরা হাঁটতে লাগলাম পাশাপাশি, হাত ছেড়ে দিয়ে।

কলেজ শেষে আমরা প্রায়ই পোস্ট অফিসে যায়। পোস্ট কার্ড কিনি, ইনলান্ড লেটার কিনি, কিছু পোস্টও করি।

আমরা দুজন একটা পত্রিকা করি। সেই কারণেই পোস্ট অফিস যেতে হয়। কবি সম্পাদক আর আমি সহ সম্পাদক।

তার হাত থেকে আমার হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার পেছনে তার এক প্রকার মনোভাব আছে, যেটা সে পোষণ করে, আমি সেটা ভালোমতোই টের পাই। সে নিজেকে খুব বড় মনে করে, এই বড় মানে অহংকার নয়, এই বড় মানে নিজেকে উঁচু দরের ভাবা। এই ভাবনা থেকেই সে প্রায় রাতে স্বপ্ন দেখে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বসে আছে, জীবনানন্দ দাশ তাদের বাড়ি এসেছেন, নজরুলের সঙ্গে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।

এইসব স্বপ্ন সে দেখে আর আমার সাথে দেখা হলেই আমাকে বলে। আমাকে বলার পেছনেও তার একটা কারণ আছে। আমি তার দেখা স্বপ্নের একটা যুৎসই ব্যাখ্যা দাঁড় করাই যেটা সে পছন্দ করে। আমি তাকে বলি, “এই স্বপ্নের অর্থ হচ্ছে তুমিও একদিন নজরুলের মত মস্ত বড় কবি হবে, জীবনানন্দ দাশের মত তোমার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে চতুর্দিকে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো তোমার বাড়ি আসবেন না কোনদিন কারণ তিনি মারা গেছেন, তবে তাঁর মত সম মর্যাদা সম্পন্ন বহু মানুষ তোমার খ্যাতির কথা শুনে তোমার বাড়ি নিশ্চয়ই আসবেন।” আমার কথা সে শুনে পুলকিত হয়। সে যেটা চায়, আমার ব্যাখ্যা তাকে তার সেই বিশ্বাসের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করে।

সে কবিতা লেখে। তার কবিতা ছাপা হয়। অজ গাঁয়ের একটা ছেলে কবিতা লিখতে পারে এটা কারো অনুমানেই ছিল না। মুখে মুখে চর্চা হতে থাকল তার এই কীর্তি। রাস্তা দিয়ে হাঁটলে লোকেরা বলতো,”এই দেখ কবি যাচ্ছে।” তার কবিতার ভাষা কঠিন। দুর্বোধ্য। এটাও হয়ে উঠল আড্ডার আলোচ্য বিষয়। “কি লেখে ওসব? লিখে কী হয়?” আর এরই ফাঁকে তার আসল নাম সাজেদুল এর পরিবর্তে সে কখন “কবি” হয়ে যায়!

আমার সঙ্গে তার আলাপ এবং বন্ধুত্ব বেশি দিনের নয়। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর। যদিও তার বাড়ি আমার বাড়ি থেকে খুব কাছে। সে উচ্চ-মাধ্যমিক দিয়েছিল দ্বিতীয়বার, প্রথমবার অনুত্তীর্ণ হওয়ার পর। কলেজে এসেই সে হয় আমার সহপাঠী। আর তখনই পত্রিকা প্রকাশের পরিকল্পনা নিই। বের করি একটি মাসিক পত্রিকা। নামটা ঠিক করে সে-ই। রাখে “আগন্তুক”। সবে আগন্তুকের দুটি সংখ্যা বেরিয়েছে।

পত্রিকার কাজের জন্য তার বাড়ি আমাকে যেতে হয়। সে আমাকে তার বড়ত্বের প্রমান স্বরূপ বিভিন্ন নিদর্শন দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। একটা ফাইল আমার সামনে রেখে বলে, “খোলো।” আমি খুলি। দেখতে পাই একগাদা চিঠি। সে বলে, “রেডিও তেহরান থেকে এসেছে সবগুলো।” আমি বিস্ময় প্রকাশ করি। বলি, “রেডিও তেহরানের সঙ্গেও যোগাযোগ আছে তোমার!”
সে সগর্বে বলে, “আছে। রেডিওতে আমার লেখা, পড়াও হয়। সময়মতো এলে তুমি শুনতে পাবে।” সে আমাকে সময় বলে। সে সময়ে একদিন আমি হাজির হই ওদের বাড়ি। তার একটা রেডিও আছে, যেটাকে সে বুকে করে আগলে রাখে। বাক্স থেকে বের করে আনে রেডিও। সামনে রাখে। নতুনই মনে হল। ব্যাটারি চেক করা হল। অন করা হল। বোঝা গেল রোজ ব্যবহার হয় না। বিশেষ বিশেষ দিনে এটা ব্যবহার করা হয়, যেমন আজ। প্রোগ্রাম শুরু হলে তার চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। যখন তার লেখা পাঠ হওয়ার আগে তার নাম উচ্চারণ হল তার চেহারায় লালিমা দীপ্ত হয়ে উঠল। মনে হল এটাই তার গায়ের প্ৰকৃত রঙ, যা নানান বেদনায় চাপা পড়ে থাকে।

পত্রিকার লেখা সংগ্রহের জন্য এর- ওর কাছে যাই। একদিন গিয়ে উঠি মাহফুজের বাড়ি। সে গান লেখে। সেই গানে সুরও দেয়। গান গায়। তার গানের ক্যাসেট বেরোবে। একটি সিনেমার জন্য তার লেখা দুটি গান নির্বাচিত হয়েছে, সে তার চুক্তিপত্র দেখায়। তার জন্য যে পারিশ্রমিক পাবে তাতে সে ভীষণ রকমের আশাবাদী। আমাদের পত্রিকার জন্য তার কাছ থেকে একটি কবিতা নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। পথিমধ্যে কবিকে বলি, “তুমিও তো পারো গান লিখতে। গান লিখে কত সুনাম, কত টাকা! পারো না?” সে কোনরূপ জড়তা না দেখিয়ে বললো, “কেন পারব না। অবশ্যই পারব। মাহফুজের থেকে ভালোই পারব। তার থেকেও কত বেশি সুনাম অর্জন করব। দেখে নিও। আমার সাথে থাকলে তুমিও পারবে। আমি তোমাকে শিখিয়ে দেব।” আমি আশান্বিত হই। তার থেকে বড় কথা কবির আকাঙ্খা দেখে মনে হল এখনই সে গান লিখে অনেক বিখ্যাত হয়ে গেছে। রোজগার করছে প্রচুর।

কবি খুব সাধারণ পরিবারের ছেলে। তার বাবা রাজমিস্ত্রি। তাও সবদিন কাজ পান না। একা হাতে সংসার টানেন। সংসারের এই টানাপোড়েনে কবিকে একটা কাজ করতে হয়, সে মুষ্ঠির চাল তোলে। গ্রামে কতকগুলো সর্দার আছেন। তাঁদের অধীনে কিছু কিছু পরিবার। বিচারে-আচারে সর্দার পাশে দাঁড়ান তাঁর অধীনস্থদের। সেইসব পরিবারের সদস্যরা সপ্তাহে একদিন এক কৌটা অর্থাৎ আড়াইশো গ্রাম করে চাল দেয়। সেটা জমা হয়। বিক্রি হয়। সামাজিক বিভিন্ন কাজে খরচ হয় সে টাকা। প্রত্যেকদিক রান্নার আগে, যে পরিমান চাল রান্না হবে তার থেকে এক মুষ্টি চাল তুলে রেখে দেন মায়েরা। সাতদিনের সেই চাল জমা করে শুক্রবারে সর্দারের কোন প্রতিনিধির হাতে তুলে দেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই মুষ্ঠির চাল তোলার কাজ করে কবি। সেই চাল তুলতে গিয়ে কবি মহিলাদের কাছে তার বড়ত্বের কথা জাহির করে। পত্রিকা করে তার মাসে পনেরো-কুড়ি হাজার টাকা ইনকাম হয়, দেশের যে কোন জায়গা গেলে তার বাস বা ট্রেন ভাড়া লাগে না, প্রধানমন্ত্রী বা যে কোনো নায়ক, খেলোয়াড় আসলে সে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে ছাড়পত্র পায় ইত্যাদি।

পত্রিকা করি নিজের পকেটের টাকা খরচ করে। পাঁচজনের কাছে বিজ্ঞাপনের জন্য গেলে দু’জন দেয়। সেই বিজ্ঞাপন ছাপা হলে পত্রিকা দিয়ে আসি। টাকা চাইলে বলে, পরে এসে নিয়ে যেও। দু’- পাঁচবার ঘুরেফিরে সে টাকা তুলতে হয়। কেউকেউ মুখের উপর বলে দেন, এসব করে কী হবে? আর কবি কিনা পাড়ার মেয়েদের বলে বেড়ায় মাসে পনেরো- কুড়ি হাজার টাকা রোজগার করে!

বাসে বা ট্রেনে তার ভাড়া লাগে না একথা সত্য। তার একটা প্রেস কার্ড আছে। সেটা দেখালে বাসের ভাড়া লাগে না। পাশাপাশি বসে আসি, আমার ভাড়া লাগে ওর লাগে না। তবে মাঝে-মধ্যে কোনো বাসের কন্ডাক্টর সে কথা মানতে রাজি হয় না। তারা ভাড়া দিতে বলে। কবি দিতে চায় না। হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।

সাংবাদিক সঙ্ঘের সাথে কবি যোগাযোগ রাখে। জেলায় কোনো নেতা-মন্ত্রী এলে সে ‘পাস’ পায়। সেই পাস নিয়ে সাংবাদিক হিসেবে সে তাঁদের সাথে দেখা করার, তাদের সভায় থাকার সুযোগ পায়। এসব কথা গ্রামের মেয়েদের বলে সে আত্মসুখ লাভ করে।

একদিন কোথাও থেকে বাড়ি ফিরতেই মা আমাকে বলল, “তোর বন্ধু এসেছিল তোর খোঁজে।”

“কোন বন্ধু মা?’

“সাজেদুল।”

“কবি!”

“হ্যাঁ। কবি।”

আমরা সবাই তাকে কবিই বলি। কবি ডাকের অন্তরালে হারিয়ে গেছে তার আসল নামটাই। “কবি” বলেই মা খুব হাসতে লাগল। আমি বললাম, “হাসছো যে মা!”

“হাসবো না কেন! তোর কবি বন্ধুর কীর্তি শোন। ওকে বসতে বলে চা করে দিলাম। সঙ্গে দিলাম বিস্কুট-চানাচুর। খেতে বললাম। সে বলল, “আগে আপনাকে এই প্লেট থেকে নিয়ে বিস্কুট-চানাচুর খেতে হবে আমার সামনে। তারপর আমি খাব।” এমন কথা তো শুনিনি কখনও। আমি হকচকিয়ে গেলাম। আমি বললাম, “তুমি খাও।” সে বলল, “আপনি না খেয়ে দেখালে আমি খাব না।”

“তখন তুমি কি করলে?”

“অগত্যা আমাকে খেতেই হল।”

“ভালো করেছো মা। তুমি না খেলে ও কিছুতেই খেত না।”

“কেন এমন করে ও?”

“শোনো তবে।” আমি বলতে শুরু করলাম। “সে নিজেকে একজন মহান কবি বলে মনে করে। আর তার ধারণা এই খ্যাতির কারণে তার শত্রুও থাকবে, যারা তার ক্ষতি সাধন করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। সেই শত্রু তুমিও হতে পারো বা আমি। সে সবাইকেই সন্দেহ করে। ভাবে, খাবারে বিষ মিশিয়ে কেউ তাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করতে পারে। তাই সে, যে কেউ তাকে কোন কিছু খেতে দিলে তাকেই আগে খেতে বলে। সে যখন তার সামনে খায় তখন তার বিশ্বাস জন্মে খাবারে কিছু মেশানো নেই। তারপর সে খায়।”

মা আমার কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যায়। হবেই। যে কেউ হবে। আমি প্রথম যখন এইরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হই আর তাকে জিজ্ঞেস করি এর কারণ, তখন তার এই যুক্তিপূর্ণ(!) উত্তর শুনে আমিও কম অবাক হইনি!

পত্রিকার নিয়মে পত্রিকা চলে। কখনো বেরোয় কখনো বেরোয় না। আমি সরে আসি। গ্রাজুয়েশন পূর্ণ হলে এসএসসি’র প্রস্তুতি নিই। দিনরাত পড়াশোনা করি। সেও করে। সে তার কৌশল ধরা দেয় না। কারো সাথে কোনো পরামর্শ করে না। আপন মনে চলে। আমি চলতে দিই।

দুজনের বিষয় এক। একসঙ্গে বসে আলোচনা করলে ফলপ্রসূ হবে, আমি তাকে বলি । সে বলে, তার সিলেবাস শেষ। সন্ধ্যা হলে সে ঘুরতে বের হয়। রাতে পড়ে। কত রাত পর্যন্ত পড়ে সেই জানে। আমি পড়ি আমার মতো। সে তার মতো পড়ে। এতে আর কারই বা কি বলার আছে! আমি বাড়িতে পড়ি। এর-ওর কাছে পড়তে যাই। ছুটোছুটি করি। বই কিনি, পত্রিকা কিনি, নোট তৈরি করি, নোট কিনি। সে কী করে জানি না। জানায় না। জিজ্ঞেস করলেও বলে না।

এই সিলেবাস তার কাছে কিছুই না। পাস করা কোনও ব্যাপারই না। এসব কথা হাওয়ায় ঘুরে বেড়ায় তার নামে। সে নাকি এমনটাই বলে বেড়ায়। হতেই পারে। আমি তার কাছে যাই। জিজ্ঞেস করি কবিতার একটা শ্লোকের মানে। বলতে পারে না। গদ্যের একটা লাইনের ব্যাখ্যা বলতে বলি। চুপ থাকে। গ্রামার বা সাহিত্যের সাল-তারিখ ভুল বলে। এটা কি তার কৌশল? আমাকে বিভ্রান্ত করছে? দেখা গেল সত্যিই সে পাস করে বেরিয়ে গেল। পড়ে থেকে গেলাম আমি। ভয় হয়। সে ভয় নিয়েই বই নিয়ে পড়ে থাকি। রাত জাগি। পাতার পর পাতা উত্তর লিখে প্র্যাকটিস করি।

রেজাল্ট বেরোলে দেখা গেল সে ফেল করেছে। পাস করে গেছি আমি। আমার পাস করা, অধিক পরিশ্রমের ফসল। সে একথা মানবে কেন? বলে বেড়াতে লাগল আমি নাকি পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র পেয়ে গিয়েছিলাম। সে আমার হাতে দেখেওছিল প্রশ্নপত্র। চেয়েছিল। আমি নাকি দিইনি। লুকিয়ে ফেলেছিলাম। এই ফাঁকে একঝলকে সে দেখে ফেলেছিল কয়েকটি প্রশ্ন। যা কিনা পরীক্ষায় এসেছিল। এই থেকেই তার বিশ্বাস আমি প্রশ্নপত্র পেয়েছিলাম। একথা সে যাদেরকে বলেছে তারা বিশ্বাস করেছে এবং আমাকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করেছে। তাদের বিশ্বাস এতটাই মজবুত যে তারা আমার কোন কথাই শুনতে রাজি নয়। আমি তখন তাদের চোখে অপরাধী। অপরাধীর কোন কথা কেই বা কখন কানে তুলেছে!

আমার চাকরি হয়ে গেলে টনক নড়ল কবির। চাকরি প্রয়োজন তারও। আমার বইগুলো তার দরকার। দরকার আমার সব নোট। নিয়ে গেল। আমাকে প্রবঞ্চক প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যার প্রশ্রয় নিয়ে যে দুরভিসন্ধি সে করেছিল সেটা মনে না রেখেই আমি তাকে যতরকম সাহায্যের আশ্বাস দিলাম। কিন্তু অন্যের কাছে নিজেকে নত করার পাঠ যার জানা নেই সে কী করে চূড়ান্ত সফলতার দর্শন পায় সেটাও দেখার বিষয় বৈকি!

কলেজের যে প্রফেসরের কাছে টিউশন পড়ে অনেকের চাকরি হল তাঁর কাছে পড়তে গেল কবি। পড়তে যায় সত্তর কিমি পথ মাড়িয়ে। প্রেস কার্ডের বদৌলতে বাস ভাড়া লাগে না। সময় তো লাগে। সে বসে অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে দূরে, স্যারের থেকে নব্বই ডিগ্রি এঙ্গেলে। সেখানেও সে একই বুলি আউড়ায়, “আমার এসব জানা আছে।”

এবছর পুনরায় সে ফেল করে। ফেল করেছে বলে দমবার পাত্র সে নয়। সে সিদ্ধান্ত নেয়, এবার সে ইতিহাস নিয়ে পরীক্ষা দেবে। আবার প্রস্তুতি। আবার বইপত্র জোগাড় করা। একবছরের পরিশ্রমের পর রেজাল্ট বেরোলে জানা গেল সে ফেল করেছে। ফেল করে সে অনুধাবন করেছে ইতিহাস নিয়ে পরীক্ষায় বসা তার ভুল হয়েছে। সে আবারও পূর্বের দু’বছরের ন্যায় আরবি নিয়ে বসতে চায়। চাইতেই পারে। প্রতি বছর পরীক্ষা। সুযোগ আছে যখন।

বাংলা নিয়ে এম.এ করবে বলে নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হল কবি। চাকরি না হোক পড়াশোনাটা অন্তত হোক। ডিগ্রির অনেক দাম। সে লড়াইয়ের মধ্যে থাকতে চায়। লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। তবে প্রতি বছর নিয়ম করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষাটা দেয়। এবং অবধারিতভাবে ফেল করে। বাংলা নিয়ে এম.এ পাস করে মাথায় ভর করে ডবল এম.এ করার নেশা। নেশা যখন চেপেছে তা কাটানোর ব্যবস্থাও আছে। সে ভর্তি হয় ইতিহাস নিয়ে।

সে আসে আমার বাড়ি। তার এম.এ পাঠের গল্প করে। ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকরা তাকে খুব ভালো বাসেন। তাকে কিছু একটা করে দেখানোর পরামর্শ দেন। সে চ্যালেঞ্জ নিয়েছে ইউনিভার্সিটি টপার হবে। স্যারেরা বলেছেন, মনমতো রেজাল্ট করে দেখাতে পারলে তাকে ইউনিভার্সিটিতে পড়ানোর জন্য ডেকে নেবেন। আমার তখন চাকরির পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে। বি.এড করছি। সে আমাকে পরামর্শ দেয়, “এমনভাবে পড়ো যেন টপার হতে পারো।”

পথিমধ্যে কামালউদ্দিন আমাকে ধরে একদিন। বলে, “কবি তোমার কাছের বন্ধু। বারংবার পরীক্ষা দিচ্ছে। একবারও পাস করতে পারছে না। কিভাবে পড়লে সফল হবে এ ব্যাপারে ওকে কিছু পরামর্শ দিও।” কামালউদ্দিন আমার বন্ধু। অধ্যবসায়ের জেরে সেও দু’বছর আগে চাকরি পেয়েছে। কবির একটা চাকরি হোক কে না চায়! সেই চাওয়া থেকেই সে আমার কাছে আবদার করেছে আমি যেন কবিকে পথ দেখায়। কিন্তু যে কবির সাথে কুড়ি মিনিট কথা হলে সে-ই আমাকে দশটা উপদেশ দেয়, তাকে আমার উপদেশ দেবার অবকাশটা কোথায়!

কবি এখন পড়ায় মন দিয়েছে। নেট, সেট এর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এক গাদা বই কিনেছে। ইতিমধ্যে তার এম.এর রেজাল্ট হয়েছে। পাস করেছে। পাস করেছে এতটুকুই। এমন কোন বলার মত রেজাল্ট হয়নি। টপার হতে পারলে না কেন? স্যারেরা তোমাকে ডাকবেন নাকি পড়াতে? ইত্যাদি প্রশ্ন করা বৃথা। করিও না। ডাকুন বা নাই ডাকুন, কোয়ালিফাই করলে নিজ যোগ্যতা বলে কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে পড়াবে। আপাতত তাই সে ব্যস্ত নেট-সেট নিয়ে।

একদিন খুব সকালে কবি হাজির আমাদের বাড়ি। সে ছিল না। দক্ষিণ ২৪ পরগনা গিয়েছিল একটা অনুষ্ঠানে। দু’দিন পর ফিরেছে গত রাতে। ফিরেই চলে এসেছে আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমার ভালোই লাগল। তবে আমার সংশয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই টের পাবো এত সকালে আমার বাড়ি আসার পেছনে তার কী অভিসন্ধি। হ্যাঁ ঠিক তাই। বসেই সে পকেট থেকে একটা কাগজ বের করল। বলল, “পড়ে দেখো।” আমি হাতে নিয়ে দেখলাম, সেটা একটা মানপত্র। যেটা সে পেয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা গিয়ে। আসল মানপত্র বাড়িতে রেখে এসেছে। নিয়ে এসেছে জেরক্স। কাল বাড়ি ফেরার সময় পথে কোথাও মনে করে জেরক্সটা করে নিয়েছে। আমি পড়লাম। পড়ে যতটা উচ্ছ্বসিত হবো বলে কবি ভেবেছিল, আমি তার বিন্দুমাত্র উচ্ছ্বসিত হলাম না। খুব ভালো ভালো কথা তার সম্বন্ধে লেখা ছিল সেখানে। যা প্রাপককে গর্বিত করার জন্য যথেষ্ট। কবি গর্বিত হয়েছে নিশ্চয়ই। সে যে গর্বিত হয়েছে, সাত সকালে সফরের ক্লান্তি দূরে রেখে আমার কাছে ছুটে আসা তারই প্রমান। মানপত্র পাঠ শেষে আমার নিষ্প্রভ চেহারা দেখে, যা জ্বলে উঠার কথা ছিল, সে কেমন দমে গেল। আমি প্রতিক্রিয়ায় কী বলি, পূর্বে তার স্বপ্ন ব্যাখ্যা করার মত, সে তা শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে চেয়ে রইল আমার দিকে। আমার কিছু একটা বলা উচিত তার প্রশংসা করে, তার বড়ত্ব প্রকাশ করে। যেমনটা আমি বরাবর করে এসেছি। করে এসেছি খানিকটা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই। এটা তার প্রতি আমার হিংসা নয়। তার খ্যাতি আমি মেনে নিতে পারছি না, তাও নয়। বরং তার খ্যাতি বলে যেটাকে সে মনে করে তার সবটাই একটা দুর্বল ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। যা যে কোন মুহূর্তে ফানুসের মত শেষ হয়ে যাবে। বরং বলা ভালো সবটাই কল্পনা। বাস্তবতা নেই। কবি কল্পনাকেই বাস্তব বলে মনে করে। অনেকটা স্বপ্নের মত। আর যেটাতে এতদিন ইন্ধন জুগিয়ে এসেছি আমি। প্রশ্রয় দিয়ে এসেছি।

তার মানপত্রে অনেক কথাই লেখা ছিল। “হে সাহিত্যরত্ন…. হে সাহিত্য বিশারদ…….আপনার কাব্য প্রতিভা বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী ছাপ রাখতে সক্ষম হয়েছে…..” জাতীয় কিছু। কিন্তু সবই তো একপ্রকার সাজানো। কিছু কথাকে সাজিয়ে গুছিয়ে, যতটা পারা যায় ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ব্যবহার করা। যিনি লিখেছেন তিনি হয়ত চেনেনও না তাকে, যার সম্বন্ধে লিখছেন। সকলকেই এক ছাঁচে ফেলে বাঁধাধরা গতে কিছু প্রশংসামূলক বাক্য। সম্মান প্রাপক দশজনের জন্য মানপত্রের ভাষা এক। শুধু প্রাপকের নামটা আলাদা। নামের জায়গায় নামটা কলম দিয়ে লেখা। এই প্রশংসাকে নিজের জন্য ধরে নিয়ে উৎফুল্ল হওয়ার মত কিছু নেই। তবু কবি আপ্লুত। এতটাই আপ্লুত যে সেটা দেখানোর জন্য সকাল-সকাল ছুটে এসেছে। “যে কথাগুলো শংসাপত্রে লেখা আছে সেগুলো তোমার সম্বন্ধে এক্কেবারে পারফেক্ট।”-এমন কিছুই সে আমার মুখ থেকে শুনতে চেয়েছিল, কিন্তু আমি তা বলিনি। বলতে পারিনি। অবশ্য কোন বিরূপ মন্তব্যও করিনি। চুপ থেকেছি। মুচকি হাসি হেসেছি শুধু। এটা তার মনঃপূত হয়নি।

সে নিজেকে বড় মনে করেই ক্ষান্ত নয়, সে চায় সকলে তাকে বড় বলুক। এই ব্যাধি তাকে আক্রান্ত করে ফেলেছে। এই ভাবনায় যখন সে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে তখনই সে হয়ে উঠছে আহত বাঘ। আমার বেলায়ও তাই ঘটলো। দু’দিন বাদে একটি সাহিত্যবাসরে আমার পাঠকৃত গল্পের সমালোচনা করে এক ঘর লোকের সামনে সে বলে বসল, “এটা কোন গল্পই হয়নি। গল্পকার এখানে নিজেকে জাহির করতে চেয়েছে।” সারাক্ষণ যে নিজেকে জাহির করতে ব্যস্ত তার মুখেই কিনা এমন কথা! সর্বক্ষণ তার অবচেতন মনে কী তবে সত্যিই তাই খেলে! নাহলে তার মুখ থেকে সে কথাই বেরুবে কেন?

বছরের পর বছর পড়াশোনা,পরীক্ষা। পত্রিকার জন্য লেখা জোগাড়, বিজ্ঞাপন জোগাড়, কম্পোজ করানো, প্রুফ দেখা, নিজের লেখালেখি সব মিলিয়ে সে ভীষণ ব্যস্ত। আর্থিক সঙ্কট তাকে এসব থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তার অধ্যবসায় তাকে টিকিয়ে রেখেছে এই কাজে। । নিজের দিকে খেয়াল করার সময় পায়নি সে। চাকরি হয়নি। বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে। বিয়ে করা হয়ে উঠেনি। তবু “আগন্তুক” প্রকাশিত হয়ে চলেছে অবিরাম।

সে কবি। সে অন্যদের থেকে আলাদা। এই ভাবনা বরাবরই তাকে গ্রামের লোকেদের থেকে দূরে অবস্থান করিয়েছে। সে সহজ হতে পারে না তাদের সঙ্গে কথাবার্তায়। মিশতে পারে না। দৃষ্টি যেন সবসময়ই উঁচুতে। একটা সম্পর্কের ফাটল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে উভয়ের ব্যবধানে। সে টের পায়নি, বা পেয়েছে। তার ভাবনা এবং বাস্তবের মধ্যে যে কতটা ফারাক সেটা তার উপলব্ধিতে কবে আসবে? সে যতটা উঁচুতে উঠে বসে আছে সেখান থেকে তাকে নামানো কি সহজ হবে?

আমি প্রত্যাশা করি নিয়ত, হয়ত এবার সে দৃষ্টি অবনত করবে। বাস্তবকে মেনে নিয়ে নিজের অহং থেকে ক্রমশ সরে আসবে। মানিয়ে নেবে নিজেকে আর পাঁচজনের সাথে। কিন্তু আমার প্রত্যাশাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাকে তরতর করে এগিয়ে নিয়ে যায় গর্বের শেষপ্রান্তে। যেখান থেকে ধপাস করে পড়া যায়, আর নেমে আসা যায় না।

(২)

শীতের সকালের নিস্তব্ধতাকে খানখান করে এগিয়ে এলো তিনটে গাড়ি। আমরা তখন রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে। গাড়ি থেকে এক এক করে নেমে এলেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী, তাঁর সঙ্গী-সাথী সমভিব্যাহারে। নেমে এলেন জেলা মুখ্য গ্রন্থাগার আধিকারিক। নেমে এলেন বিধায়ক এবং তাঁর বিশ্বস্ত কয়েকজন। সঙ্গে কলকাতার বিখ্যাত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক। তাঁরা কবির কাছে এসেছেন। কবিকে দেখতে এসেছেন। আমি কাছে এগিয়ে গেলাম। স্বাগত জানালাম। তাঁদেরকে নিয়ে কবির বাড়ির পানে হাঁটতে লাগলাম।

গলির শেষ মাথায় কবির বাড়ি। আমরা পৌঁছালাম। সেখানে আগে থেকেই অনেক লোকজন জমা হয়েছিল। আমাদের দেখে তাদের মধ্যে সাড়া পড়ে গেল। সবাই কবিকে ঘিরেই বসেছিল। আমাদের জন্য পথ করে দেওয়া হল। মাননীয় বিধায়ক এগিয়ে গেলেন। এগিয়ে গেলেন একদম খাটিয়ার কাছাকাছি। তাঁকে অনুসরণ করলেন বাকিরা। কবিকে গোসল করানো হয়ে গেছে। কাফন পরানো হয়ে গেছে। শুধু মন্ত্রীদের দেখানোর জন্য মুখখানি খোলা ছিল। তাঁদের দেখা হতেই মুখ বন্ধ করে দিয়ে খাটিয়া তুলে নেয়া হল কাঁধে। এগিয়ে যেতে লাগল কবরস্থান পানে তার আত্মীয়-পরিজনেরা।

আজ থেকে শুরু হবে জেলা বইমেলা। গতকালই মন্ত্রী মহোদয় জেলায় এসে পৌঁছেছেন। বইমেলা উদ্বোধন করবেন। সঙ্গে কিছু সাংগঠনিক কাজ। মন্ত্রী মহোদয়ের উপস্থিতিতে সন্ধ্যার সময় জেলা গ্রন্থাগারে বইমেলা সংক্রান্ত মিটিং চলা কালীনই কবির বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সদর হাসপাতালে এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মানবিক মন্ত্রী তাই জন্য স্বয়ং কবির বাড়ি পৌঁছে যান এবং কবির আত্মার শান্তি কামনা করে তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

কবির জানাজা সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছে আর পেছন থেকে হাত নাড়ছেন মন্ত্রী, বিধায়ক, কবি-সাহিত্যিক ও অন্যান্যরা।

কে জানত, আমার করা স্বপ্নের ব্যাখ্যা একদিন এভাবে সত্যি হয়ে যাবে!

Tags: Poet StoryBangla StoryTwo Friends Bangla Story
ShareTweet

Related Posts

বিশ্বের সবথেকে রহস্যময় পরিবার

January 20, 2025
0

মুদাসসির নিয়াজ বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের পরিবারের অজানা সত্যকাহিনি, যা জানলে অনেকেই শিউরে উঠবেন। এই ইহুদি পরিবার বহু যুদ্ধের নেপথ্য কুশীলব।...

জ্যোতিষ

December 7, 2024
0

মুহাম্মদ জিকরাউল হক "বাবা আমি কী হয়েছি বলো তো?" টিউশন থেকে এসে ছেলে জিজ্ঞেস করলো আমায়। আজ ওর টিউশনে অংক...

বাঁশ

December 7, 2024
0

মুহাম্মদ জিকরাউল হক নৌমানকে ফোন লাগালেন তারেক সাহেব। রিং হতে লাগল। নৌমান আয়ুর্বেদিক ডাক্তার। চিকিৎসা এবং ওষুধ দুইই তার কাছে...

Recommended

আম আদমি পার্টির অফিসে তালা, কেন?

আম আদমি পার্টির অফিসে তালা, কেন?

3 months ago
খুব দ্রুত ব্রিগেডেই হবে সমাবেশ, ফুরফুরায় ঘোষণা মুসলিম নেতৃত্বের, উঠলো ওয়াকফ অন্দোলনকারীদের মামলা প্রত্যাহারের দাবীও

খুব দ্রুত ব্রিগেডেই হবে সমাবেশ, ফুরফুরায় ঘোষণা মুসলিম নেতৃত্বের, উঠলো ওয়াকফ অন্দোলনকারীদের মামলা প্রত্যাহারের দাবীও

3 weeks ago
Facebook Twitter Youtube
TDN Bangla

TDN Bangla is an Online bengali news portal, provides voice for poeple by sharing most authentic news in bengali.You can find out news like international, national, state, entertainment, literature etc at TDN Bangla.

Category

  • Uncategorized
  • আন্তর্জাতিক
  • খবর
  • খেলা
  • দেশ
  • ধর্ম ও দর্শন
  • প্রবন্ধ
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • রাজ্য
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়
  • সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • About Us
  • Privacy Policy
  • Contact Us

© 2024 TDN Bangla | developed with ♥ by GS Kitchen.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
No Result
View All Result
  • হোম
  • রাজ্য
  • দেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়

© 2024 TDN Bangla | developed with ♥ by GS Kitchen.

This website uses cookies. By continuing to use this website you are giving consent to cookies being used. Visit our Privacy and Cookie Policy.