শিশু কোলে লড়াইয়ের মাঠে মায়েরা, চা ঘুগনি বিক্রি করে প্রতিবাদ চাকরি প্রার্থীদের

নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলা, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

শিশু কোলে চাকরির জন্য লড়াইয়ের মাঠে নেমেছেন মায়েরা। আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের পর চা ঘুগনি বিক্রি করে প্রতিবাদ করছেন চাকরি প্রার্থীরা।

বিভিন্ন চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন মঞ্চে গেলেই দেখা যাবে, মায়েরা কোলে শিশু নিয়ে আন্দোলন করছেন। কেউ কেউ বলছেন, পেটে বাচ্চা নিয়ে চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি। তারপর ইন্টারভিউ দিয়েছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত নিয়োগ হয়নি। এর মধ্যে আবার সন্তান হয়েছে, সেই সন্তান নিয়ে আন্দোলন করছি। বছর চলে যাচ্ছে, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় চলে যাচ্ছে, চাকরি মিলছে না।
ধর্ম তলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির কাছে প্রায় একমাসের অধিক ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ এবং প্রশিক্ষিত নট ইনক্লুডেড প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীরা মঞ্চ তৈরি করে চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এই মঞ্চে আন্দোলন করছেন নদিয়ার চাপড়ার মহৎপুরের ফরিদা খাতুন, সঙ্গে আছে বছর দুইয়ের একটি শিশু। প্রায় সাত ঘন্টার আসা যাওয়ার পথ। ফরিদা গণমাধ্যমকে জানান, ‘‘চাকরির দাবিতে এই আন্দোলন চলছে। সংসার চালানোর জন্য চাকরিটা খুব প্রয়োজন। তাই রোজ না পারলেও যখনই সময় পাই, এখানে চলে আসি। সারা দিনের জন্য আসি। বাড়িতে ওকে দেখার মতো তেমন কেউ নেই। তাই ওকে সঙ্গে নিয়েই আসতে হয়।’’
ফরিদা আরও জানান, ‘‘সকাল ৬টায় বাড়ি থেকে বেরোলে সাড়ে ১০টা নাগাদ এই বিক্ষোভ মঞ্চে পৌঁছতে পারি। আবার সাড়ে চারটে নাগাদ এখান থেকে বেরোলে রাত ৯টা বেজে যায় বাড়ি পৌঁছতে।’’
চাকরিপ্রার্থী অচিন্ত্য সামন্ত জানান, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর নবান্নের সভাঘরে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, প্রাথমিকের ‘নট ইনক্লুডেড’ সমস্ত প্রার্থীকেই নিয়োগ করা হবে। কিন্তু এখনও সেই নিয়োগ হয়নি। ফরিদার মতো কয়েক জন মা আছেন, যাঁরা মাঝেমধ্যেই শিশুদের নিয়ে এই মঞ্চে চলে আসেন। এই মায়েদের যন্ত্রণা কবে শেষ হবে?’’
তবে প্রাইমারি চাকরি প্রার্থী ফরিদা একা নন, এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই শিশু কোলে নিয়ে নিয়মিত আন্দোলনে আসেন। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন পাস চাকরি প্রার্থীদের মধ্যেও বেশ কিছু মহিলা সন্তান কোলে নিয়ে আন্দোলন করেন।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগে চা,ঘুগনির ব্যবসা করতে পরামর্শ দিয়েছেন। তা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। রবিবার চাকরি প্রার্থীদের অনেকে প্রতীকী ছোলা মুড়ি বিক্রি করেছেন।

Exit mobile version