প্রধানমন্ত্রীর মন্দির উদ্বোধনে আঘাত সংবিধানের ভিত্তিতে, রাজ্যসভায় মন্তব্য বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের

কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খার্গে সোমবার সংসদের উচ্চ কক্ষে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, আরএসএস ভারতের সংবিধান মানেনি, জাতীয় পতাকা মানেনি। তারা মনুস্মৃতি চালু করতে চেয়েছিল।
অন্যদিকে রাজ্যসভায় ‘ভারতীয় সংবিধানের ৭৫ বছরের গৌরবোজ্জ্বল যাত্রা’ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে সিপিআই(এম) সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে কোনও ধর্মীয় উপাসনাস্থলের, কোনও মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনে গেলে সংবিধানের একেবারে মর্মস্থলে আঘাত করা হয়।
তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান গ্রহণ করেছিলেন দেশের মানুষ। তাঁদের জন্যই সংবিধান। যাঁদের অনেকেই এই তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে বাধ্য হন।’’
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আদিবাসী নেতা জয়পাল সিং বলেছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষের কথা শোনা হয় না। আমি সেই অংশের মানুষ যাদের বাইরের থেকে এসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল জঙ্গলের গভীরে। আমরা সবচেয়ে গণতান্ত্রিক। কেবল গণতন্ত্রের আশ্বাস যথেষ্ট নয়, সাংবিধানিক অধিকারের নিশ্চয়তা জরুরি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সংবিধান প্রয়োগের একাধিক পর্ব রয়েছে। ১৯৭০ পর্যন্ত আমরা দেখেছি ব্যক্তিগত সম্পত্তি জাতীয় সম্পত্তিতে রূপান্তর হতে। এই জাতীয়করণ দেশের অর্থনীতিকে সবল করেছিল। সংবিধানের গুতুত্বপূর্ণ ভিত্তি হলো অর্থনৈতিক গণতন্ত্র। এই ধরনের পদক্ষেপের সেই অভিমুখ ছিল।’’
তাঁর মন্তব্য, ‘‘এরপর ১৯৭৫ সালে কালো অধ্যায় দেখেছি। জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল, সাংবিধানিক গণতন্ত্রের পক্ষে তা ক্ষতিকর ছিল। শেষ পর্যন্ত সেই প্রধানমন্ত্রীকে জনতার কাছে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল।’’
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘২০১৪-তে দেখেছিলাম সংবিধানের থেকে বিচ্যুতির প্রবণতা শুরু হয়েছে। আজ নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সংবিধানকে ধ্বংসের দিকে এগনো হচ্ছে। যখন আমরা দেখি প্রধানমন্ত্রী কোনও মন্দির উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন, তখন সংবিধানের মর্মবস্তুতে সরাসরি আঘাত করা হয়। চলছে সাংবিধানিক নীতিসমূহের ওপর আক্রমণ। সংবিধানের শপথ নিয়ে কোনও প্রধানমন্ত্রী কোনও মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করতে পারেন না। তিনি জনতার টাকায় একাজ করতে পারেন না।’’

Exit mobile version