শিক্ষাক্ষেত্রে বিপ্লব, মালদার ‘টার্গেট পয়েন্ট (আর) স্কুল’ রাজ্যজুড়ে আলোচিত

ছবি নিজস্ব

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড—এই সত্যকে সামনে রেখে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গঠনের উদ্দেশ্যে ‘টার্গেট পয়েন্ট (আর) স্কুল’ এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মালদা জেলার কালিয়াচকের সাহাবাজপুরে অবস্থিত এই বিদ্যালয় ২০২০ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাজ্যের মেধাতালিকায় স্থান করে নিচ্ছে। শুধু মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক নয়, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাতেও এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত ২০২৪ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে ‘টার্গেট পয়েন্ট (আর) স্কুল’ অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। চারজন ছাত্র রাজ্যের মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে—তাদের মধ্যে একজন ৬ষ্ঠ, দুইজন ৯ম এবং একজন ১০ম স্থান অধিকার করেছে। এটি শুধু মালদা নয়, গোটা উত্তরবঙ্গের জন্যই গর্বের বিষয়।

২০২৪ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় নজরকাড়া ফলাফল

শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রম, শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং বিদ্যালয়ের পরিকল্পিত প্রস্তুতির ফলে ‘টার্গেট পয়েন্ট (আর) স্কুল’ এই অনন্য সাফল্য অর্জন করেছে।

বোর্ড মেধাতালিকায় স্থানপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা:

শ্রেণীবিভাগ অনুযায়ী ফলাফল:

📚 বিষয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ নম্বর:

এই ফলাফল বিদ্যালয়ের নিয়মানুবর্তিতা ও শিক্ষকদের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টার স্বীকৃতি।

JEE (MAINS)-2025-তেও অসাধারণ সাফল্য!

শুধু মাধ্যমিক নয়, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও ‘টার্গেট পয়েন্ট (আর) স্কুল’ তার শিক্ষার্থীদের অসাধারণ সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী গোলাম মাসুদ বিশ্বাস সম্প্রতি JEE (MAINS)-2025 Session-1 পরীক্ষায় ৯৮.২৯৫ পার্সেন্টাইল স্কোর করেছে। এটি মালদা তথা উত্তরবঙ্গের জন্য একটি বড় সাফল্য।

গোলাম মাসুদ ২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও রাজ্যজুড়ে ৭ম স্থান অধিকার করেছিল। আজ আবারও সে নিজের মেধা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করল।

এই সাফল্য প্রমাণ করে যে সঠিক পরিকল্পনা ও অধ্যবসায় থাকলে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফল হতে পারে।

বিদ্যালয়ের উত্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক উবিল হোসেন জানান, ২০০৭ সালে মাত্র দু’টি কক্ষ নিয়ে শুরু হওয়া এই বিদ্যালয় আজ উত্তরবঙ্গের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে।

বিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা:

বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষাদান করে, যাতে গরিব ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার সুযোগ পায়। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু একটি স্কুল নয়, বরং একটি আশার আলো, স্বপ্ন পূরণের মঞ্চ।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

শিক্ষাক্ষেত্রে ‘টার্গেট পয়েন্ট’-এর অবদান

‘টার্গেট পয়েন্ট (আর) স্কুল’ শুধুমাত্র ভালো ফলাফল করছে না, বরং শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও আধুনিক জ্ঞানচর্চার পথেও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি জানিয়েছে, “আমাদের লক্ষ্য প্রত্যন্ত এলাকার মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা যাতে অর্থের অভাবে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উজির হোসেন বলেন, ‘নিয়মিত পড়াশোনা ও পরিকল্পিত প্রস্তুতি থাকলে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও ছাত্রছাত্রীরা সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জন করতে পারে। আমরা প্রথম থেকেই একটা টার্গেট ঠিক করে কাজ করে যাচ্ছি।’

এমনই এক দর্শনকে সামনে রেখে বিদ্যালয় শিক্ষার প্রসারে কাজ করে চলেছে। শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এই প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা, সমাজসেবা, নেতৃত্বের গুণাবলি ও মূল্যবোধ তৈরির কাজেও বিশেষ গুরুত্ব দেয়।

মিশনের কর্তাদের অন্যতম মুকুল হক টিডিএন বাংলাকে বলেন, ২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ‘টার্গেট পয়েন্ট (আর) স্কুল’ আরও এক নতুন ইতিহাস গড়বে—এমনটাই প্রত্যাশা সকলের। আমি শুধু বলতে চাই, এগিয়ে যাও, ‘টার্গেট পয়েন্ট’! শিক্ষাক্ষেত্রে আরো নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করো!”

Exit mobile version