স্ত্রী কখনোই স্বামীর একচ্ছত্র অধীনস্থ নন; বিবাহের পরও তাঁর নিজস্ব অধিকার ও সম্মান রয়েছে। এমনই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর জেলার এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রীর করা মামলার শুনানিতে সোমবার এই রায় দেন হাইকোর্টের বিচারপতি।
অভিযোগকারীর বক্তব্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত প্রদ্যুম্ন যাদব তাঁর এবং স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও গোপনে মোবাইল ফোনে ধারণ করেন এবং তা ফেসবুকে আপলোড করেন। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে সেই ভিডিও স্ত্রীর ভাই এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গেও শেয়ার করেন। এই ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারা ৬৭ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, যেহেতু অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী বৈধ বিবাহসূত্রে আবদ্ধ, তাই এই ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারা ৬৭ প্রযোজ্য নয়। এমনকি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আপোষের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
তবে সরকারি আইনজীবী এর তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, বিবাহের সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কোনও ব্যক্তির অধিকার নেই গোপনে ভিডিও ধারণ করে তা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করার। এটি একপ্রকার বিশ্বাসঘাতকতা এবং বেআইনি কাজ।
শুনানির সময় হাইকোর্টের বিচারপতি বলেন, “স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধন মানেই স্ত্রী তাঁর সম্প্রসারিত অংশ নন। তিনি একজন স্বতন্ত্র ব্যক্তি, যার নিজস্ব অধিকার, আকাঙ্ক্ষা এবং গোপনীয়তা রয়েছে। স্বামীর প্রতি স্ত্রীর যে বিশ্বাস, তা ভেঙে দেওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয়। গোপনীয়তার অধিকারকে সম্মান করা কেবল আইনগত নয়, বরং নৈতিক বাধ্যবাধকতাও।”
এই মন্তব্যে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, বিবাহ কোনওভাবেই একজন ব্যক্তিকে অন্যের ওপর নিরঙ্কুশ অধিকার দেয় না। ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং গোপনীয়তা বিবাহের পরও সমান গুরুত্বপূর্ণ।