টিডিএন বাংলা:
আর নেই তিনি। শুক্রবার রাত একটা নাগাদ চুঁচুড়া ফার্ম সাইড রোডে ‘সোনাঝুরি’ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’র স্রষ্টা কবি অরুণ চক্রবর্তী।
বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
কবির স্ত্রী, দুই ছেলে, বৌমা ও নাতিরা রয়েছেন।
প্রয়াত অরুন চক্রবর্তীর বৌমা সুদেষ্ণা চক্রবর্তী জানান,’শুক্রবার কলকাতার মোহরকুঞ্জে জঙ্গল মহল উৎসবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। একটু ঠান্ডা লেগেছিল। ফুসফুসে সমস্যা ছিল করোনার পর থেকেই।’
১৯৪৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর কলকাতার বাগবাজারে কবির জন্ম। ১৯৯০ সাল থেকে চুঁচুড়ায় থাকতেন তিনি।
অরুন চক্রবর্তী শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করে হিন্দুস্থান মোটরে চাকরি করতেন। সঙ্গে লেখালিখিও করতেন। তবে তাঁকে পরিচিতি এবং খ্যাতি এনে দিয়েছিল ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙা মাটির দেশে যা’। ওই কবিতা পরে গান হয়ে লোকের মুখে মুখে ফিরেছে। তবে অসংখ্য কবিতা রয়েছে কবি অরুন চক্রবর্তীর। বাংলার লোক সংস্কৃতি নিয়ে চর্চা করতেন। পাহাড় জঙ্গল আদিবাসী এলাকায় ঘুরতেন তিনি।
সান্টাক্লজের মত লাল পোশাক আর কাঁধে ঝোলা ব্যাগ মাথায় রঙিন রুমাল বাধা ছিল অরুন চক্রবর্তীর ট্রেড মার্ক। ঝোলায় থাকত চকলেট। ছোটোদের দেখলেই চকলেট দিতেন। সবাইকে বুড়ো বলে ডাকতেন।
জানা গেছে, অরুণ চক্রবর্তী ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসে শ্রীরামপুর স্টেশনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মহুয়া ফুলের গাছ ও ফুল দেখতে পান। ওই জায়গায় মহুয়া গাছ ও ফুলকে দেখে তাঁর বড্ড বেমানান মনে হয়েছিল। তাঁর মনে হয়েছিল বাংলার ধান, আলু উৎপাদনের অঞ্চলে মহুয়া ফুলের গাছ কেন থাকবে, মহুয়া তো লাল পাহাড়ের রানি, এই গাছকে সেখানেই মানায়। মহুয়া তো লাল মাটির গাছ। তার পর তিনি ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙামাটির দেশে যা’ গান রচনা করেন। সেই গান এখন বিখ্যাত।
কবির প্রয়াণে সংগীত শিল্পী সুরজিৎ চ্যাটার্জী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘চলে গেলেন ‘লাল পাহাড়ির দেশে’র স্রষ্টা আমাদের অরুণদা, কবি অরুণ কুমার চক্রবর্তী। তোমার লেখা গান, কবিতা সারাজীবন মানুষের মনে থেকে যাবে। শুধু তোমার সাথে দেখা হলেই কাঁধের ঝুলি থেকে লজেন্সটা আর কেউ বের করে খাওয়াবে না। যেখানেই থেকো ভালো থেকো, প্রণাম জানাই।’