ছেলেটি দেখতে মিষ্টি।
কবিতা লেখে। পত্রিকার সম্পাদকও।
বয়সও বেশি না। মনকাড়া ব্যবহার। আমার ভালো লেগে গিয়েছিল। সখ্যতা গড়ে উঠেছিল দু’জনের।
একদিন ও টাকা চেয়েছিল। ধারে। ব্যবসার প্রয়োজনে। আমার কাছে টাকা ছিলও। দিলাম এই ভেবে যে, লাগে যদি কারো কাজে, লাগুক না।
পচাঁনব্বই হাজার টাকা। তিনবারে নিয়েছিল। দুই মাসের ব্যবধানে। তিনবারে ফেরত দিয়েছে পনের হাজার টাকা। এক বছরে। তারপর! টাকা চাই। বলে, “দেব দাদা।” আবার চাই। উত্তর দেয়, “দিয়ে দেব দাদা।”
শুধু উত্তর দেয়। টাকা আর দেয় না।
এখন উত্তর দেয়া বন্ধ। ফোনও ধরে না।
মানুষের এই পরিবর্তন নিয়েই ভাবছিলাম।
ভাবনার মাঝেই ছেলে এল। ছোট ছেলে। থ্রিতে পড়ে। এসে বলল, “বাবা, তোমার কী ধারণা, কালো পিঁপড়ে বেশি খতরনাক নাকি লাল?”
“অবশ্যই লাল।”
“না। তোমার ধারণা একেবারেই ভুল। কালো পিঁপড়ে বেশি খতরনাক।”
“কালো পিঁপড়ে তো কামড়ায়ই না!”
“তোমাদের সময়ে হয়ত কামড়াতো না। কিন্তু এখন কামড়ায়। আমার কাছে সবুদ আছে।”
ছেলে হিন্দি কার্টুন দেখে। তাই মাঝে মাঝে একেকটা হিন্দি শব্দ বলে ফেলে।
“কই দেখি তোমার সবুদ?”
প্যান্ট তুলে দেখালো, হাঁটুর নীচে পিঁপড়ে কামড়ে লাল করে দিয়েছে। আর বলল, “আমি পিঁপড়েটা নিজ হাতে ধরে দেখলাম ওটা কালো পিঁপড়ে। কী এবার বিস্বাস হল তো!”
” পিঁপড়েটা কি ছোট ছিল? না বড়?”
“ছোট।”
আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম শুনে। অবিশ্বাস করতেও পারছি না। ঐ যে ‘সবুদ’ আছে! সবুদ তো আমার কাছেও আছে। একটা আপাদমস্তক ভদ্র ছেলে কীভাবে দংশন করে যাচ্ছে রোজ!
মুহাম্মদ জিকরাউল হক
মসিমপুর, মালদা-732206
মোবাইল-9733748211
hoqzikraul@gmail.com