মুরগী - TDN Bangla
  • About Us
  • Privacy Policy
  • Contact Us
Wednesday, June 18, 2025
  • Login
No Result
View All Result
TDN Bangla
  • হোম
  • রাজ্য
  • দেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়
  • হোম
  • রাজ্য
  • দেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়
No Result
View All Result
TDN Bangla
No Result
View All Result
ADVERTISEMENT

মুরগী

Umar Faruque টিডিএন বাংলা
December 7, 2024
| সাহিত্য ও সংস্কৃতি
মুহাম্মদ জিকরাউল হক

ফেসবুক পোস্টটা চোখে পড়তেই বদিউজ্জামান রূপম কমেন্ট করল, “মুরগি কই?”

মোনালিসা আহমেদ এই পোস্ট দিয়েছে। একটি ঝা চকচকে রেস্টুরেন্টে টেবিলের একপ্রান্তে বসে আছে সে। সামনের টেবিলে কফি, জুস, চিপস এবং পাকোড়া জাতীয় কিছু। পাশে রাখা আছে কয়েকটি চামচ। ঢাকা দেয়া জলের গ্লাস এবং জগ। দুটোই কাঁচের। ক্যাপশন- ”শহরের ফাইভ স্টার হোটেলে ব্রেকফাস্ট।”

মোনালিসা অনলাইন আছে। কমেন্টের উত্তরে সে কী লেখে এটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল রূপম। কমেন্টের উত্তর সে খুব দ্রুতই দেয়।

ক’দিন পূর্বেও মোনালিসার দু’টি পোস্টে ঠিক একইরকম কমেন্ট করেছিল রূপম। একটিতে ছিল লাঞ্চ করার ছবি। ক্যাপশনে লেখা ছিল, “শাহী বিরিয়ানি, আমার পছন্দের খাবার। কলকাতা শহরের নামকরা এক হোটেলে।” ফাইভ স্টার কী থ্রি স্টার, তার অবশ্য উল্লেখ ছিল না। সেখানেও তার একার ছবি
ছিল। টেবিলের অন্যপ্রান্তে কে ছিল দেখা যাচ্ছিল না, এমন কায়দা করে ছবিটি তোলা। বা ছবিটি তুলেছিল কে জানার উপায় ছিল না! রূপম লিখেছিল, “মুরগি কই?” সঙ্গে সঙ্গে উত্তর এসেছিল, “স্যার, এটা মাটন বিরিয়ানি।”

অন্য একটি পোস্টে মোনালিসাকে দেখা যাচ্ছিল একটি দুইতলা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে। সঙ্গে যুৎসই ক্যাপশন, “দার্জিলিংয়ে পাহাড়ের গায়ে হোটেলের সামনে। যেখানে তিনদিন ধরে অবস্থান করছি।” এখানেও ছবিতে তাকে একা দেখা যাচ্ছিল। তার বেশিরভাগ ছবিতেই দ্বিতীয়জন থাকে না। রূপমের সেই একই প্রশ্নের উত্তরে সে লিখেছিল, “এই অঞ্চলে আশে-পাশে কোথাও মুরগি দেখতে পাবেন না স্যার।”

মোনালিসা রূপমের ছাত্রী। রূপম যখন স্কুলে জয়েন করল তখন মোনালিসা একাদশে। দ্বাদশের পর স্কুল থেকে বেরিয়ে গেছে চার বছর আগে। ইতিমধ্যে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে। এখন ও মাস্টার ডিগ্রি করছে কলকাতায়।

পাঁচজনের মধ্যে আলাদা করে চোখে পড়ার মত চেহারা মোনালিসার। তবে রূপমের তাকে প্রথম চোখে পড়েছিল একটু অন্যভাবে। বছরের শুরু। সেদিন স্কুলে বার্ষিক অনুষ্ঠান ছিল। সে নৃত্য করবে বলে একটি ঘরে সাজছিল। আর সর্বক্ষণ তার আশ-পাশে ঘোরাঘুরি করছিল একটি ছেলে। সে বিদ্যালয়ের পোশাকে ছিল না। রূপম ভেবেছিল প্রাক্তন কোনো ছাত্র হবে হয়ত। তার রাগ হচ্ছিল। মেয়েদের সাজঘরে সে কেন? কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল রূপম। তখনই মোনালিসা পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে বলল, “আমার বাবা।” রূপম একগাল হাসল। সে কিছুতেই হিসেব মেলাতে পারছিল না তার বাবার বয়স এত কম কেন!

একদিন দুটো কবিতা নিয়ে ও এলো রূপমের কাছে। স্কুল ম্যাগাজিনে ছাপার জন্য দিয়ে গেল। বলে গেল, “আমারটা কোনমতেই বাদ দেবেন না স্যার।” রূপম স্কুল ম্যাগাজিনের সম্পাদক। পত্রিকা প্রকাশ হবে মাস খানেক পরেই। প্রচুর লেখা জমা পড়ছে। ফাইল বন্দি করে রেখে দিচ্ছে সব। পড়ে দেখছে না কারুর লেখা। সব লেখা জমা হয়ে গেলে বাছাই পর্ব শুরু হবে। মোনালিসার লেখাটা ফাইলে রাখার আগে একবার চোখ বুলিয়ে নিল রূপম। ভালো লাগল তার। লেখার হাত আছে মেয়েটার। পত্রিকা প্রকাশ হল যথাসময়ে। মোনালিসার দুটো কবিতাই ছাপা হল। যদিও একজনের একটা লেখাই ছাপা দস্তুর।

মোনালিসা ভালো আবৃত্তি করতে পারে। ভালো বক্তব্য রাখতে পারে। কুইজে ভালো পারফরম্যান্স করতে পারে। স্কুলের যে কোনো অনুষ্ঠানে তার পারফরম্যান্স সকলের নজর কাড়ত। অনুষ্ঠানের আগে রূপমের সঙ্গে দেখা করে ঝালিয়ে নিত নিজেকে। যথাসাধ্য সাহায্য করত রূপম। এসব তার ভালোলাগার জায়গা। ভালোও লাগত তার।

দুই বছর পর স্কুল থেকে চলে যাওয়ার আগে মোনালিসা প্রিয় ছাত্রী হয়ে উঠেছিল রূপমের। রূপম তাকে “মনা” ডাকত। প্রিয় ছাত্রী হয়ে উঠেছিল আরো সকল শিক্ষকের। তবে শেষমেশ রূপমের সঙ্গে সম্পর্কটা থেকে গিয়েছিল লেখালেখির সূত্র ধরে। রূপম একটা পত্রিকা বের করে। তাতে প্রত্যেক সংখ্যায় থাকে মনার কবিতা। কবিতা এখন সে পূর্বের তুলনায় ভালো লেখে। সঙ্গে লেখে অণুগল্প। মনা রূপমকে প্রায়ই বলে, “আপনি আমাকে উৎসাহ না দিলে কবেই লেখালেখি ছেড়ে দিতাম স্যার।” রূপম কোনো সাহিত্য পাঠের আসর ডাকলে সেই আসরে মনার উপস্থিতি ছিল অপরিহার্য।

রূপমের কলকাতা যাওয়ার উপলক্ষ্য থাকত দুটি। এক, সাহিত্যের কোনো অনুষ্ঠান। দুই, বই প্রকাশের ব্যাপারে প্রকাশকের সঙ্গে দেখা করা। এর বাইরে তার আর কলকাতা যাওয়া হয়ে উঠে না। এই দুই কারণ হোক বা অন্যকোনো কারণ, কলকাতা গেলে মনার সঙ্গে দেখা করাটা ছিল অবশ্যম্ভাবী। মনা তাকে বলেই রেখেছিল, “কোনো কাজে কলকাতা আসলে আমাকে অবশ্যই খবর দেবেন স্যার। আমার যত কাজই থাক না কেন আমি আপনাকে যথেষ্ট সময় দেব।” রূপম খবর দেয়। সময় দেয় মনাও। মনার সঙ্গ রূপমেরও ভালো লাগে। মুখর করে রাখে সময়টাকে।

সারাদিন কাজ সেরে সন্ধ্যেয় রূপম বাড়ি ফিরতে চাইলে মনা মিনতি করত, “থেকে যান না স্যার রাতটা। আমি আপনাকে রাতের শহর ঘুরিয়ে দেখাব।” আর সর্বক্ষণ বলতে থাকত, “আপনি একজন সুখী মানুষ স্যার। চাকরি করেন। টাকার অভাব নেই। বই লেখেন। নতুন নতুন বই প্রকাশ হয়। কত বড় বড় লেখকের সঙ্গে পরিচয় আপনার।”

এই ভাবনার মধ্যেই মনার উত্তর এলো। সে লিখেছে, “ব্রেকফাস্টে মুরগী! কী যে বলেন স্যার! তবে লাঞ্চে অবশ্যই মুরগী থাকবে আজ। সেই ছবিও আপনার জন্য পোস্ট করে দেব।”

কয়েকমাস আগের কথা। একদিন সকালে একই সঙ্গে কলকাতা আসার কথা ছিল দুজনের । সেই মর্মে রাতে কথাও হয়েছিল। রূপম স্টেশনে এসে দেখে মনা পৌঁছায়নি। ফোন করলে রিং হয় কিন্তু ধরে না। অগত্যা সে ট্রেন ধরে চলে আসে। তারপর ব্যস্ত হয়ে পড়ে নিজের কাজে। মনে আর থাকে না মনাকে। মনাই ফোন করে ঠিক বিকেলে। বলে, “জ্বর চলে এসেছিল স্যার। সকালে ঘুম ভাঙেনি। এগারোটার ট্রেন ধরে এইমাত্র নামলাম শিয়ালদহে। আপনি কোথায় আছেন বলুন। আমি আসছি। আপনার সঙ্গে দেখা করে তারপরে বাসায় যাব।”

রূপম বলে,”থাকব আর কোথায়! কলেজ স্ট্রিটে। এছাড়া আর কোথায়ই বা যাওয়ার আছে আমার। তবে আমারও তো ফেরার সময় হয়ে এলো। সন্ধ্যায় ট্রেন।”

“তা হোক স্যার। সন্ধ্যা হতে এখনো বাকি আছে। আ্যটলিস্ট দেখা তো হবে আপনার সঙ্গে। আমি আসছি।”

মনা আসে। রুপম বলে, “চলো তুমি আগে খেয়ে নাও। অনেকক্ষণ খাওয়া হয়নি তোমার।”

মনা উত্তরে হাসে। আর বলে, “জানি স্যার! আপনার এই ব্যাপারে খুব খেয়াল। খাব তবে এখন নয়। আপনাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে। সময় তো প্রায় হয়ে এলো। চলুন স্যার অটো ধরি। বাকি কথা না হয় স্টেশনেই হবে।”

“তাই চলো।” পা বাড়ায় রূপম। সঙ্গে মনা। পথে একটা স্টেশনারি দোকান দেখে থমকে দাঁড়ায় সে। রূপমকে বলে, “এক মিনিট স্যার।” দোকানের ছেলেটিকে ফেস পাউডার দেখাতে বলে। ছেলেটি কয়েকরকম প্রোডাক্ট সামনে নামিয়ে রাখলে মনা তার একটি পছন্দ করে। তারপর রূপমকে উদ্দেশ্য করে বলে,”এটা কিনে দিন না স্যার। আমার খুব পছন্দ হয়েছে।” রূপম হাতে নিয়ে দাম দেখে। চারশো ত্রিশ টাকা। বলে,” এত টাকা তো আমার কাছে নেই ।”

মনা মন খারাপ করে বসে। বলে,”কী যে বলেন স্যার! এই কটা মাত্র টাকা আপনার কাছে থাকবে না!” রূপম খানিক আগেই এটিএম থেকে টাকা তুলেছে। সেই টাকা ব্যাগেই আছে। তারপরেও বলে,”সব টাকা শেষ করে ফেলেছি। ফেরার জন্য কটা টাকা মাত্র পড়ে আছে পকেটে। আজ না হয় পরে নিও কেমন।”

মনার মুখ মলিন দেখায়। সে ছেলেটিকে বলে, “রেখে দিন দাদা। টাকা হচ্ছে না। পরে এসে নিয়ে যাব।”

দুজন গিয়ে অটোয় উঠে। মনার মুখ ভার। কোনো কথা বলছে না। অটো থেকে নেমে বলল,”আপনি আমাকে নিয়ে দিলেন না স্যার। আমার খুব খারাপ লাগছে।”

খারাপ লাগছে রূপমেরও। তবু কিছু করার নেই। সে বলে, “সত্যি সঙ্গে টাকা নেই মনা। এটিএম কার্ডটা আনতেও ভুলে গেছি। বায় দা ওয়ে তুমি কিছু খাবে না? খিদেয় তোমার মুখ কেমন শুকনো লাগছে।” পকেট থেকে একশো টাকা বের করে দিয়ে বলে, “তুমি বরং হোটেলে যাও। আমি ঠিক ট্রেন ধরে নেব।”

মনা হাত থেকে টাকাটা নেয়। বলে, “আচ্ছা স্যার।” রূপম স্টেশনের দিকে পা বাড়ায়। মনা যায় হোটেল অভিমুখে।

ট্রেনে বসে রূপমের মনে পড়ে যায় তার মাত্র দিন পনেরো আগের কথাটা। নতুন বই বেরুবে বইমেলায়। প্রচ্ছদ নির্বাচন করার জন্য একদিন কলকাতায় আসতে হল তাকে। যতটা সময় লাগবে বলে ভেবেছিল তার ঢের আগেই কাজটা হয়ে গেল। সন্ধ্যা বেলায় ফেরার টিকিট। একা একা বসে থেকে সময় পার করা বিরক্তিকর। সে ফোন করল মনাকে। মনা বলল, “এখনই আসছি স্যার। আপনি কোথায় আছেন বলুন।”

রূপম বলল, “কলেজ স্ট্রিটে আছি। বর্ণ পরিচয় মার্কেটের সামনে।”

মনা উত্তরে বলল, “আমার আসতে এক ঘন্টার মত লাগবে স্যার। আপনি অপেক্ষা করুন। আমি চলে আসছি।”

অপেক্ষা করতে থাকে রূপম। আর করতে থাকে ট্রেন ধরার আগে এই সময়টুকু কীভাবে অতিক্রান্ত করা যায় তার পরিকল্পনা। পুরাতন বইয়ের দোকানে ঘোরা যেতে পারে। যা রূপমের অত্যন্ত পছন্দের। কফি হাউসে বসা যেতে পারে, যা মনা পছন্দ করে। কলেজ স্কয়ারে বসা যেতে পারে। এটা দুজনেরই পছন্দ। তবে শেষ সিদ্ধান্ত নেবে মনা। সে যেটা চাইবে সেটাই হবে।

মনা আসতে দেরি করে। নির্ধারিত সময় এক ঘন্টা পার হয়ে গেছে। রূপম ভাবতে থাকে, সে কী একবার ফোন করবে। নাকি আর কিছুক্ষণ দেখবে। সিদ্ধান্ত নেয় অপেক্ষা করার। আরো আধঘণ্টা পার হয়ে গেলে ফোন
করে রূপম। ওপার থেকে মনা বলে, “আর বলবেন না স্যার, পার্সটা চুরি হয়ে গেছে বাসে। ভাড়া দেবার সময় খেয়াল হল। আপনি দুশ্চিন্তা করবেন না। আমার ব্যাগেও টাকা আছে। আমি প্রায় এসে গেছি। জাস্ট কয়েক মিনিট।”

পার্স চুরি হওয়ার কথা শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিল রূপম। ব্যাগে অন্যত্র টাকা ছিল বলে বাঁচোয়া। নইলে অপমানিত হতে হত। বুদ্ধি আছে মেয়েটার। মনে মনে তারিফ করে তার। তারও আধঘন্টা পর ও এলো। এসেই বলল, “স্যার আজ না হয় কাল আমাকে কলেজ স্ট্রিটে আসতেই হত বই কেনার জন্য। আজ এসে ভালোই করলাম। আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। অনেকদিন আপনার সঙ্গে দেখা হয়নি!”

“কিছু খাবে?” রূপম জিজ্ঞেস করল।

“না স্যার। হোস্টেলে খেয়েই বেরিয়েছি। তবে ক’টা বই কিনতে হত। টাকাগুলোও চুরি হয়ে গেল! থাক। কাল না হয় আরেকবার আসতে হবে!” কথাগুলো এমনভাবে বলল মনা যে রূপমের মায়া হল। সে বলল, “চলো না! কী বই কিনতে হবে দেখি। যদি পাওয়া যায়।”

মনা হয়ত এমনটাই চাইছিল। সে তৎক্ষণাৎ বলে উঠল, “হ্যাঁ স্যার চলুন। এসেছি যখন।”

বই দেখা হল। কেনাও হল। তিনটে বই। দাম লাগল পাঁচশো চল্লিশ টাকা। টাকাটা রূপমই দিয়ে দিল। মনা ট্রেনে তুলে দিতে এলো রূপমকে। শীতের দিন। ছটা বাজতেই অনেক রাত মনে হতে লাগল। রূপম বলল,”ফেরার বাস পাবে?”

মনা বলল,”বাস পাওয়া যাবে। তবে খুব ভিড় হবে এইসময়। বরং আমি একটা ওলা বুক করে নেব। আপনি আমাকে আর একশো টাকা দেবেন।”

“সিওর!” বলে দুশো টাকার একটা নোট বের করে দিল রূপম। আর বলল, “এটা রেখে দাও।”

মনা বলল, “একশো টাকা হলেই চলে যাওয়া হবে স্যার। বেশি লাগবে না।”

রূপম বলল, “ইটস ওকে। রেখে দাও।”

মনা খুব খুশি হল। ট্রেনে চেপে বসল। হাত নেড়ে নেড়ে গল্প করল। ট্রেন ছাড়ার সময় হলে বলল,” স্যার! আপনি এবার আসুন। আবার দেখা হবে।” নেমে গিয়ে জানালার পাশে দাঁড়াল ও। হাত নাড়ল। মুখে মিষ্টি হাসি। হাত নাড়াল রূপমও। আর তখনই ট্রেনটা ছেড়ে দিল।

সেদিন পার্স হারিয়ে যাওয়ার গল্প বলে মনা যে তাকে মুরগী বানিয়েছিল, একথা একবারের জন্যও মনে হয়নি তার। এটাকে সে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিল। কিন্তু আজ ফেস পাউডার কিনে দিতে বলা এবং না পেয়ে খারাপ লাগা, স্টেশন পর্যন্ত না এসে টাকা নিয়ে হোটেলে খেতে চলে যাওয়া এটাই প্রমান করে যে, সে আজও রূপমকে মুরগী বানাতে চেয়েছিল কিন্তু রূপম মনার পাতা ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে নিয়েছে তার প্রত্যয়ের জোরে। মনার কুট-কৌশল ধরে ফেলেছে সে। সে দ্বিতীয়বার আর মুরগী হয়ে চায়নি।

মনার বাবা এমন কোনো বড়লোক নয় যে তার মেয়ের জন্য থ্রি স্টার-ফাইভ স্টার হোটেলে ব্রেকফাস্ট-লাঞ্চ বা ডিনারের টাকা জুটাবে। কার্যত তিনি এমন কোনো নির্দিষ্ট কাজই করেন না যার দ্বারা নিয়মিত উপার্জন হয়। তিনি যে কী করেন সেটাই রূপম জানে না। তারপরেও তার চলাফেরা দেখে মনে হবে খুব বড়লোক। খানিকটা মনার মতই। হতে পারে মনা তার বাবাকে অনুসরণ করেই একেকজনকে মুরগী বানিয়ে নিজের স্ট্যাটাস উঁচু দেখানোর চেষ্টায় মত্ত থাকে। একজন কেউ যখন বুঝতে পারে তাকে মুরগী বানানো হচ্ছে তখন সে কেটে পড়ে, অবশ্য তার আগেই সে ফুতুর হয়ে যায়। তখন মনা ঠিক আরেকজনকে জুটিয়ে নেই। মুরগীর তো আর অভাব নেই এ দেশে!

ফেসবুক ঘাটতে গিয়ে রূপম দেখল মোনালিসা আহমেদ কিছুক্ষণ পূর্বেই ট্রেনের এসি কামরায় চড়ে কলকাতা যাওয়ার একটা ছবি পোস্ট করেছে। সেখানেও একই কায়দা। ছবিতে দ্বিতীয়জন নেই। এবারও সে কাকে মুরগী বানিয়েছে তা বোঝার জো নেই! তারপরেও বদিউজ্জামান রূপম লিখল, “মুরগী কই?” মনা কী উত্তর দেয় তা দেখার জন্য বসে থাকতে ইচ্ছে হল না রূপমের। সে নেট বন্ধ করে দিয়ে মোবাইল রেখে উঠে পড়ল। কারণ, যে একেকবার একেকজনকে মুরগী বানাতে পারে সে একেকবার একেকরকম উত্তরও দিতে পারবে।

Tags: Bangla Short StoryChicken Story
ShareTweet

Related Posts

বটগাছ ও একজন ফেরেশতা

December 7, 2024
0

মুহাম্মদ জিকরাউল হক খবর এল, বটগাছটা আর থাকবে না। পড়ে যাবে। আমরা পড়িমরি ছুটলাম। গিয়ে দেখি, নদীর পাড় কাটতে কাটতে...

Recommended

৯০ বছরের রীতির অবসান, অসম বিধানসভা অধিবেশনে জুম্মার নামাজের দু’ঘণ্টার বিরতি উঠিয়ে দিল বিজেপি সরকার

৯০ বছরের রীতির অবসান, অসম বিধানসভা অধিবেশনে জুম্মার নামাজের দু’ঘণ্টার বিরতি উঠিয়ে দিল বিজেপি সরকার

4 months ago
ধুলিয়ান ও সামসেরগঞ্জ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের জরুরি অনুরোধ করলেন দক্ষিন মালদার সাংসদ ঈশা খাঁ চৌধুরী

ধুলিয়ান ও সামসেরগঞ্জ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের জরুরি অনুরোধ করলেন দক্ষিন মালদার সাংসদ ঈশা খাঁ চৌধুরী

2 months ago
Facebook Twitter Youtube
TDN Bangla

TDN Bangla is an Online bengali news portal, provides voice for poeple by sharing most authentic news in bengali.You can find out news like international, national, state, entertainment, literature etc at TDN Bangla.

Category

  • Uncategorized
  • আন্তর্জাতিক
  • খবর
  • খেলা
  • দেশ
  • ধর্ম ও দর্শন
  • প্রবন্ধ
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • রাজ্য
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়
  • সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • About Us
  • Privacy Policy
  • Contact Us

© 2024 TDN Bangla | developed with ♥ by GS Kitchen.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
No Result
View All Result
  • হোম
  • রাজ্য
  • দেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়

© 2024 TDN Bangla | developed with ♥ by GS Kitchen.

This website uses cookies. By continuing to use this website you are giving consent to cookies being used. Visit our Privacy and Cookie Policy.