নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট, রিপোর্ট দিল আরপিএফ

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে কুম্ভগামী পূণ্যার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় রবিবার তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন রেল সুরক্ষা বাহিনী বা আরপিএফের কর্তব্যরত ইন্সপেক্টর। তাতে পদপিষ্ট হওয়ার মুহূর্তে দিল্লি স্টেশনের পরিস্থিতির বর্ণনা রয়েছে।
গত শনিবার ওই স্টেশনে ট্রেনে ওঠার সময় হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের প্রাণ যায়। নিহতদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী।
ওই ঘটনা নিয়ে রেল নিয়মমাফিক রেল সেফটি কমিশনারকে তদন্তের ভার দিয়েছে। একাধিক মহল থেকে পুলিশের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। স্টেশনে ভিড়ের জন্য রেলের অতিরিক্ত টিকিট বিক্রিকে দায়ী করেছে কোনও কোনও মহল।
সেই রাতে দিল্লি স্টেশনে কর্তব্যরত আরপিএফ ইন্সপেক্টর রবিবার সকালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া রিপোর্টে লেখেন, ঘটনার সময় দিল্লি স্টেশনের তিনটি ফুটওভার ব্রিজের দুটিতে বিপুল সংখ্যায় পূর্ণ্যার্থী অপেক্ষা করছিলেন। আরপিএফ চেষ্টা করছিল তাদের প্ল্যাটফর্মে নামাতে। কারণ ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করা যাচ্ছিল না।
ওই সময় ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে শিবগঙ্গা এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর ঘোষণা করা হয় ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়াগরাজগামী পরবর্তী ট্রেন ছাড়বে। সেই ঘোষণা মাত্র অপেক্ষমান যাত্রীরা ওই প্ল্যাটফর্মে যেতে চেষ্টা করেন। ভিড় ঠেলে যেতে সমস্যা হচ্ছিল। তখনই হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর রেল ঘোষণা করে প্রয়াগরাজগামী ট্রেনটি ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে। দ্বিতীয় ঘোষণার পর পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে যাওয়া যাত্রীরা মুখ ঘুরিয়ে ১৬ নম্বরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কিছু যাত্রী পড়ে যান। তা থেকেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১৮ যাত্রীর।
এর আগে রেলের তরফে জানানো হয়েছিল, পদপিষ্টের ঘটনার নেপথ্যে কোনও ভুল ঘোষণা ছিল না। আরপিএফের দেওয়া রিপোর্টে অবশ্য ইঙ্গিত, প্ল্যাটফর্ম সংক্রান্ত ভুল ঘোষণার জেরে যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। নয়াদিল্লি স্টেশন উত্তর রেলের নিয়ন্ত্রণাধীন। উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক হিমাংশুশেখর উপাধ্যায় বলেন, “একাধিক বিভাগকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। আরপিএফ তাদের মধ্যে অন্যতম। সব রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর রেলের উচ্চপর্যায়ের কমিটি সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
আরপিএফ ইন্সপেক্টরের ওই রিপোর্ট রেল কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে প্রকাশ করেনি। যদিও আরপিএফ রেলের নিজস্ব বাহিনী। তারা রেল এলাকায় জনমানসের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। রেল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকে জিআরপি। দিল্লি স্টেশনের ঘটনা নিয়ে তারা এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

Exit mobile version