নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলা:
এই দেশের সরকার হল জালিম, স্বৈরাচারী, সংবিধান বিরোধী বলে মন্তব্য করলেন ফুরফুরা সুন্নাতুল জামায়াতের সম্পাদক পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারে এক সুবিশাল জনসভা করেছিল সংগঠনটি। ওই সভায় আব্বাস সিদ্দিকী বলেন, “এই দেশের সরকার হল জালিম, স্বৈরাচারী, সংবিধান বিরোধী। তারা দেশের সম্পদ যেমন লুঠ করছে, তেমনি দেশের সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত সম্পদও হস্তগত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ওয়াকফ সম্পত্তি হল মুসলমানদের ব্যক্তিগত সম্পদ। মুসলমান সমাজের বিকাশের জন্য, সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য এই সম্প্রদায়ের পূর্বপুরুষরা আল্লার নামে দান করে গেছেন। সংস্কারের নামে কেন্দ্রীয় সরকার এটাকেই দখল নিতে চাইছে। এটা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না।”
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, “আব্বাস সিদ্দিকী এই বিশাল সমাবেশের সামনে বর্তমান পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করে সমাজের বিপদগুলিকে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ওয়াকফ সম্পত্তিকে আত্মসাৎ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। ১৯৫৪ সালে কংগ্রেস আমলে যে ওয়াকফ আইন চালু হয়েছিল, সেই আইনকেই সংশোধনের নামে পালটে দিয়ে ওয়াকফ বোর্ডে মুসলমানদের সংখ্যালঘু করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই দেশের হিন্দু, মুসলমান, আদিবাসী, দলিত, খৃষ্টান, শিখ, জৈন- সবাই পরস্পরের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চাই। কিন্তু একের অন্যের হক কেন কেড়ে নেবে? এই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তি কিংবা খৃষ্টানদের গীর্জার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তিতে মুসলমানরা যেমন থাকবেন না, সেইরকম ওয়াকফে অন্য সম্প্রদায় মানুষের থাকার কোন দরকার নেই। তিনি বলেন, আসলে সারা দেশজুড়ে প্রায় ২৭ লক্ষ বিঘে ওয়াকফ সম্পত্তিকে দখল করে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত করছে সরকার। আব্বাস সিদ্দিকী এই প্রসঙ্গে এই রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, তাদের ১৩ বছরের শাসনে কয়টি ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে তার হিসেব দেওয়া হোক। তিনি আরো বলেন, সব সরকারই ওয়াকফ সম্পত্তির সম্পদ নয়ছয় করেছে। এদিনের সমাবেশে তিনি দেশের সংবিধান বহির্ভূত কার্যকলাপের তীব্র সমালোচনা করে ১৯৯১ সালে তৈরি উপাসনাস্থল আইনকে কঠোরভাবে বলবত করার পক্ষে সওয়াল করেন। তিনি বলেন, দেশবিরোধীরাই মসজিদ ভেঙে মন্দির গড়তে চায়। এদের বিরুদ্ধে সংবিধানকে সামনে রেখে দীর্ঘ সংগ্রামের আহ্বান জানান আহলে সুন্নাতুল জামাতের কর্ণধার। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সম্পাদক পীরজাদা বাইজিদ আমিন, সারা বাংলা মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতি সাধারণ সম্পাদক সেখ মেহেবুব আহমেদ প্রমুখ।