ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে রাজ্য জমিয়তে উলামার ঐতিহাসিক গণঅবস্থান কলকাতায়

ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনকে “কালা কানুন” আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার কলকাতার রামলীলা ময়দানে আয়োজিত হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জমিয়তে উলামার ডাকে এক ঐতিহাসিক গণঅবস্থান। ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দাবিতে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল নামে এই কর্মসূচিতে।

গণঅবস্থানে মুখ্য বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজ্য জমিয়তে উলামার সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দীকুল্লাহ চৌধুরী। তিনি তীব্র ভাষায় আইনটির বিরোধিতা করে বলেন, “এই কালা কানুন সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার ও সম্পত্তির উপর সরাসরি আঘাত। একে রুখতেই হবে।”

মাওলানা চৌধুরীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে জমিয়তের কর্মী ও সমর্থকরা জানান, আজকের জনসমাগম এতটাই বিশাল ছিল যে, এই সমাবেশ যদি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে হত, তাহলেও স্থান সংকুলান হতো না। তারা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ব্রিগেডে আরও বড় সমাবেশের আহ্বান জানান এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে।

এই গণঅবস্থানের প্রভাবে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় কলকাতা শহর। মৌলালি, পার্ক সার্কাস, ধর্মতলা, এজেসি বোস রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি বার্তা পাঠানো হয়। জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে মাওলানা সিদ্দীকুল্লাহ চৌধুরীকে ফোনে জানানো হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গে এই নতুন ওয়াকফ আইন কার্যকর করা হবে না।

এই মহাসমাবেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করেন শিখ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মের বিশিষ্ট প্রতিনিধিরা। তাঁরা সকলেই এককণ্ঠে এই আইন বাতিলের দাবি জানান এবং ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরেন।

সমগ্র মহানগরী পরিণত হয়েছিল যেন এক প্রতিবাদ মিছিলে। নানা জেলা থেকে বাসে করে হাজার হাজার মানুষ কলকাতায় আসেন এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে। রামলীলা ময়দানে পা রাখার জায়গা পর্যন্ত ছিল না বলে জমিয়ত নেতৃত্ব জানিয়েছেন। এদিন জনতার আবেগ ও দৃঢ়তা যেন স্পষ্ট বার্তা দিল, “সংবিধানবিরোধী কোনো আইন বাংলায় চলবে না।”

Exit mobile version