ব্রিটিশ আমল থেকে নিয়ম ছিল জুম্মার নামাজের সময় বিধানসভা দুই ঘণ্টা ছুটি থাকবে। কিন্তু সেই ৯০ বছরের রীতির অবসান হচ্ছে। অসম বিধানসভা অধিবেশনে জুম্মার নমাজ পাঠের প্রচলিত দু’ঘণ্টার বিরতি তুলে দিয়েছে বিজেপি সরকার। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট এআইইউডিএফ বিধায়ক রফিকুল ইসলাম।
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেছেন, “বিধানসভায় প্রায় ৩০ জন মুসলিম বিধায়ক আছেন। আমরা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মতামত প্রকাশ করেছি। কিন্তু তাদের (বিজেপি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে এবং সেই ভিত্তিতেই এটা চাপিয়ে দিচ্ছে।”
এদিকে কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা দেবব্রত সাইকিয়া বলেন,”আমার দলের বেশ কয়েকজন সহকর্মী এবং এআইইউডিএফ বিধায়ক নমাজ পড়তে যাওয়ার কারণে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিতে পারেননি। যেহেতু এটি শুধুমাত্র শুক্রবারের জন্য একটি বিশেষ প্রার্থনার বাধ্যবাধকতা, তাই আমার মনে হয় কাছাকাছি সময়ে এর জন্য একটি ব্যবস্থা করা যেতেই পারে।”
অন্যদিকে অসম বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ দৈমারি বলেছেন, “সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ প্রকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে, অসম বিধানসভার কার্যধারা অন্য যেকোনও দিনের মতো শুক্রবারেও পরিচালনা করার প্রস্তাব হয়েছিল। যা নিয়ম কমিটির সামনে উত্থাপন করা হয়েছিল তা সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছিল।”
আবার মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছিলেন যে, “এটি ১৯৩৭ সালে মুসলিম লীগের সৈয়দ সাদুল্লা কর্তৃক প্রবর্তিত একটি প্রথা ছিল এবং এই প্রথা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আসলে ঔপনিবেশিক ব্যবস্থাকে বাতিলের পদক্ষেপ।”
তিনি আরো মন্তব্য করেন,”১৯৩৭ সালে মুসলিম লিগ নেতা সৈয়দ সাদউল্লা এই প্রথা চালু করেছিলেন, যা আজ থেকে বাতিল হল।”
অসম বিধানসভা সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয়। শুক্রবার নয়টায় শুরু হতো এবং জুম্মার নামাজের জন্য দুই ঘণ্টা বিরতি দেওয়া হয়। প্রায় ৯০ বছর ধরে এই নিয়মে চলতো বিধানসভা। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময়েও মুসলিম বিধায়কগণ জুম্মার নামাজের বিরতি পেতেন। কিন্তু বিজেপি সরকারের ‘নামাজের বিরতি’ উঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে জুম্মার দিনেও সকাল সাড়ে নয়টায় বিধানসভা শুরু হবে।