মুহাম্মদ নুরুদ্দীন,টিডিএন বাংলা:
দিনের পর দিন ইংরেজদের অত্যাচারে সারাদেশ যখন জর্জরিত। ঘৃণা ও বৈষম্যের শিকার হয়ে ভারতীয় সেনাদের মনে যখন বারুদ জমা হয়েছে, ঠিক সেই সময় বারুদের স্তূপে আগুন লাগানোর মোক্ষম কাজটি করতে এগিয়ে এলেন অকুতোভয় বীর সেনানী মঙ্গল পান্ডে। হাজার ১৮২৭ সালের ২৯ জুলাই বর্তমান উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলার নাগওয়া গ্রামে মঙ্গল পান্ডের জন্ম হয়। ১৮৪৯ সালে তিনি বেঙ্গল সেনাবাহিনীতে ব্রিটিশ সরকারের একজন সৈনিক হিসাবে চাকরি গ্রহণ করেন।
ইংরেজ সরকারের অবর্ণনীয় অত্যাচারের কারনে চারিদিকে যখন ধুমায়িত বিদ্রোহের আগুন মঙ্গল পান্ডে তখন উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে। অত্যন্ত সাহসী এই মহান বীর সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। এদিকে ইংরেজরাও সতর্কতার সঙ্গে কড়া পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। ১৮৫৭ সালের ২৯ মার্চ রবিবার। আকাশে বাতাসে তখন বিদ্রোহের আগুন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর মনে চাপা উত্তেজনা। কেউ এগিয়ে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। হঠাৎ এগিয়ে এলেন মঙ্গল পান্ডে। পূর্ব থেকেই সেনাবাহিনী জড়ো হয়েছিল এক জায়গায়। মঙ্গল পান্ডে এক দীর্ঘ জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে ব্রিটিশদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার আহবান জানালেন সৈনিকদের।
খবর পেয়ে ছুটে এলেন লেফটেন্যান্ট বরগে। তিনি হামলা করলেন পাণ্ডের ওপর। কিন্তু মঙ্গল পান্ডে পাল্টা আক্রমণ করে হত্যা করেন। লেফটেন্যান্ট বরগের গুলিতে আহত হন মঙ্গল পান্ডে। কিন্তু ততক্ষণে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে গিয়েছে চারিদিকে। ব্রিটিশ বাহিনীকে লক্ষ্য করে শুরু হয়েছে হামলা। ব্রিটিশ সেনাপতি হিয়ারসে দলবল নিয়ে ছুটে এলেন ব্যারাকপুরে। আহত মঙ্গল পান্ডে ব্রিটিশদের হাতে ধরা না দিতে নিজেই নিজেকে গুলি করেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। ব্রিটিশ বাহিনীর হাতে তিনি বন্দি হন। ১৮৫৭ সালের ৮ এপ্রিল প্রকাশ্যে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়। অমর স্বাধীনতা সংগ্রামী এই বীর সৈনিকের ত্যাগ ও বীরত্বের কারণেই আজ ভারত স্বাধীন। আমরা থাকে চিরকাল মনে রাখবো।