মুহাম্মদ জিকরাউল হক
হাজী মোবারক উল্লাহ এবং জহুরা খাতুনের সুযোগ্য পুত্র মোহাম্মদ আবুল বাসার ছিলেন একজন মানুষ গড়ার কারিগর, আদর্শ শিক্ষক। সমগ্র কর্মজীবন ব্যাপী শিক্ষাই ছিল তাঁর ব্রত। তারই সমান্তরালে চালিয়ে গেছেন লেখালেখি। লিখেছেন বহু প্রবন্ধ। লিখেছেন কবিতা। সমালোচনা সাহিত্যেও তাঁর ছিল সমান দখল। আর জেলার আঞ্চলিক ইতিহাস খুঁজে বার করার কাজ করে গেছেন আমৃত্যু।
১৯৪২ সালে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা থানার পুলিন্দা গ্রামে জন্ম। পুলিন্দা ফ্রি বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবপুর জুনিয়র বিদ্যালয়, ভাবতা নেতাজি হাই স্কুল থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পড়াশুনা সমাপ্ত করে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের ভবনে সান্ধ্য কলেজ “রাজা কৃষ্ণনাথ কলেজ অফ কমার্স”-এ ভর্তি হন। ইত্যবসরে পেয়ে যান দমকল বাহিনীর সৈন্য বিভাগে মাসিক ১২৫ টাকা বেতনের চাকরি। কর্মস্থল কলকাতার বেহালা। অন্যদিকে পেয়ে যান একটি বেসরকারি কোম্পানির চাকরি- হাউস নাম্বারিং এর সুপারভাইজার পদ। কর্মস্থল বীরভূম জেলার সিউড়ি ও নলহাটি। এই কাজে যোগদান করেন। কিন্তু কয়েকমাস পর কর্মকর্তার সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ার কারণে সেই কাজ ছেড়ে চলে আসেন। শিক্ষার প্রতি একাগ্রতা ও গভীর অনুরাগের কারণে বাংলা সাহিত্যের সান্মানিক সহ স্নাতক ডিগ্রি লাভের জন্য বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেন কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে ভর্তি হওয়া হয় না। গিয়ে ভর্তি হয়ে যান বানজেটিয়ার আইটিআই কলেজে, সার্ভে এবং ফিটার নিয়ে। মন বসে না পড়ায়। তাঁর ইচ্ছে স্নাতক ডিগ্রি। সেই সুযোগও চলে আসে। খবর পান বেলডাঙ্গা এসআরএফ কলেজে ভর্তির জন্য আবেদনপত্র নেয়া হচ্ছে। আবেদন করেন এবং ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। একদিকে পড়াশোনা অন্যদিকে শুরু করলেন পুলিন্দা জুনিয়র হাইস্কুলে শিক্ষকতার কাজ। স্নাতক ডিগ্রি অর্জন শেষে পান “পদ্মনাভপুর হাই মাদ্রাসা”র প্রধান শিক্ষক পদ গ্রহণের আমন্ত্রণপত্র। সরকারি অনুমোদনহীন বিদ্যালয়। ১৯৭৪ সালে যোগদান করেন সেই পদে। ১৯৭৬ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি অনুমোদন লাভ করে। তারপর একান্ত প্রচেষ্টায় ও নানান অধ্যাবসায়ের মধ্য দিয়ে সেই বিদ্যালয়কে উন্নীত করেন দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত। পদ্মনাভপুর গ্রামে গড়ে তুলেন লাইব্রেরী, ক্লাব। সরকারি নিয়মে মালদা রাষ্ট্রীয় শিক্ষক প্রশিক্ষণ ট্রেনিং মহাবিদ্যালয় থেকে বিএড করেন। এই সময় আরেকবার চাকরির নিয়োগপত্র পান। এবার ইন্সপেক্টর অফ পুলিশ। শিক্ষকতার চাকরিকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রত্যাখান করেন সেই প্রলোভন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম এ করেন।
স্কুল জীবন থেকেই শুরু হয় লেখালেখি। তখনও তিনি মাধ্যমিক দেননি, “পয়গম” পত্রিকার “সব পেয়েছি সবুজ সাথীর আসর”-এর পাতায় লিখে ফেলেন একটি কবিতা-
“জীবন তরীর হাল টানিতে
খেলিব মরণ খেলা।
অজানার পথে পাড়ি দিয়ে যাব
শেষ হয়ে গেলে বেলা।
জোনাকি আলোয় পথ দেখে নেব
ফকির সন্ধ্যা বেলা।।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই আসরটি পরিচালনা করতেন সাহিত্যিক আবু আতাহার মহাশয় ‘জোনাকি’ ছদ্মনামে। কচিকাঁচারা জোনাকি ভাইয়ের উপদেশাবলীকে পাথেয় করত জীবনের। তিনি বলতেন, “ বীর বিক্রমে এগিয়ে যাও। পড়ো, লেখো, মনোযোগ সহকারে।” তারই উত্তরে কবি লিখেছিলেন এই কবিতাটি।
কলেজে পাঠরত অবস্থায় ভালোলাগা এক নারীকে উদ্দেশ্য করে লিখে ফেলেন অন্য একটি কবিতা-
“সবচেয়ে ছোট সে কথা
তোমায় বলা হল না।
সবচেয়ে ছোট যে রেখায় তোমায় আঁকা যেত-
তা থাকল জ্যামিতির বুকে।
তোমার ক্ষুধিত প্রাণ মুক্ত ভ’রে হোক শান্ত হোক। বেদনার বক্ষ চিরে তব শিরে নামুক আলোক।।”
মহাবিদ্যালয়ের বাৎসরিক পত্রিকায় ক্রমান্বয়ে লিখে ফেললেন কয়েকটি প্রবন্ধ, ইংরেজিতে- 1.Looking towards the world. 2. The necessity of the study of philosophy in this modern scientific age. 3. Rabindranath’s sheser kabita. বাংলায় লিখলেন “স্বদেশী আন্দোলনের পুরোধা বিপ্লবী কবি কাজী নজরুল ইসলাম” আর “আবিষ্কার” নামে একটি কবিতা।
বিএড কলেজে পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব পান। তাতে লিখেন,“The modern system of English education in Higher Secondary stage.
হৃদয়তন্ত্রিতে লেখালেখির বীজ বপন হয়েছিল আগেই। সেই অঙ্কুর বেড়ে উঠছিল ঠিক মতো। তিনি হরিহরপাড়া এসে সাহিত্যচর্চার একটা উপযুক্ত পরিবেশ পেয়েছিলেন। হরিহরপাড়ায় ছিল ‘হরিহরপাড়া কল্লোল’ নামে একটি সাহিত্য গোষ্ঠী। গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে ছিলেন প্রসার ভারতীর সাংবাদিক হাতেমুল ইসলাম, হরিহরপাড়া শিশু নিকেতনের প্রধান শিক্ষক রকিব উদ্দিন ইউসুফ, মাওলা বক্স, আকরাম আলী মন্ডল, সাব রেজিস্টার বিনয় দত্ত, বিডিও শ্রী শৈবাল বর্মন, ইউবিআই শাখার শৈবাল দাস, মানসিক ডাক্তার আলী হাসান, অধ্যাপক আবুল হাসনাত প্রমুখ ব্যক্তিত্ব। কল্লোল গোষ্ঠীর সাহিত্য বাসর বসত প্রাবন্ধিক আবুল বাসার সাহেবের বাড়িতে। তাঁদের প্রচেষ্টায় ‘ঢেউ’ নামে একটি ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকাও প্রকাশিত হতে শুরু করে। সেখানে বাংলাদেশ, ত্রিপুরা, মিশর প্রভৃতি দেশ থেকেও লেখা আসতো। লিখতেন বহু নামিদামি লেখক। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আব্দুল আজিজ আল আমান, ইবনে ইমাম, আবু আতাহার, এটিএম রফিকুল হাসান, আমেদ আলী প্রমুখ।
লিখেছেন বহু প্রবন্ধ বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন পরিসরে। ইতিহাস বিষয়ক প্রবন্ধের মধ্যে আছে-“ক্ষুধার্ত শৃগালের দরবারে সিরাজের ক্রন্দন”, “পর্তুগিজদের সম্ভারে পুষ্ট বাঙালীর জীবন”, “ইংরেজ বণিকদের মানদণ্ড ছেড়ে রাজদণ্ডে পদার্পণ”, ” পলাশীর যুদ্ধের পর কর্মরত মুসলিমদের বঞ্চনার ইতিহাস” প্রভৃতি। প্রবন্ধগুলি বিষয়বস্তুতে যতটা তথ্যসমৃদ্ধ ভাব-ভাবনায় ততটাই উন্নতমানের। শিরোনাম রচনায়ও তিনি রেখেছেন শিল্প নৈপুণ্যের ছাপ।
তাঁর প্রবন্ধে তিনি স্মরণ করেছেন বিভিন্ন মনীষীদের, বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে। যেমন, “জন্মের সার্ধশতবর্ষের আলোকে গান্ধীজি”, ” রেনেসাঁসের বাণী বাহক কবি নজরুল”, ” তৃতীয় বিশ্বে জন্মের সার্ধশতবর্ষের আলোকে রবীন্দ্রনাথ”, ” জন্ম সার্ধশতবর্ষে মুর্শিদাবাদের জ্যোতিষ্ক রামেন্দ্রসুন্দর”, “জন্মের সার্ধশতবর্ষের আলোকে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়”।
তরুণ প্রজন্মের বেশ কয়েকজন লেখকের গ্রন্থের সমালোচনাও করেছেন তিনি। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, “ডঃ নুরুল ইসলামের দৃষ্টিতে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ হচ্ছেন ইসলামিক চিন্তার ধারক।” ডঃ নুরুল ইসলামের থিসিস গ্রন্থের সমালোচনার উপর ভিত্তি করে লেখা এই প্রবন্ধটি। শবনম পারভেজ বহরমপুর নিবাসী এক তরুণ লেখিকা। তাঁর লেখা “কুরবানী” নামক বক্ষ্যমান প্রবন্ধের একটি মূল্যবান সমালোচনা-” শবনম পারভেজের দৃষ্টিতে আত্মসংযম ত্যাগ ও পশুত্ব মনোবৃত্তি বলিদানের অপর নাম কুরবানী।” “তরুণ লেখক মুহাম্মদ জিকরাউল হকের দূরদৃষ্টিতে মালদা জেলার পরিস্ফুট কলগার্ল ” বস্তুত “কলগার্ল” শিরোনামে লেখা একটি গল্পের চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন তিনি তাঁর এই প্রবন্ধে। এই লেখকের “মিসড কল” গ্রন্থের প্রতিটি গল্প নিয়ে আলাদা আলাদা করে সুদীর্ঘ সমালোচনাও করেছেন তিনি।
বেশকিছু প্রবন্ধে আমরা পাই তার মৌলিক ভাবনার সম্যক পরিচয়। তার মধ্যে রয়েছে “বিশ্বায়নের যুগে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি মনীষী জন্মের পক্ষে ক্ষতিকারক।” এই প্রবন্ধে তিনি ১০ জন মনীষীকে নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে দেখিয়েছেন যে তাঁরা পিতা-মাতার পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম এমনকি কেউ কেউ চতুর্দশ বা পঞ্চদশ তম সন্তান। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন চতুর্দশতম সন্তান এবং বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন ছিলেন পঞ্চদশ তম সন্তান। লেখক বলতে চেয়েছেন যদি তাঁদের পিতা-মাতা এক বা দুই সন্তান নিতেন তবে হয়তো বিশ্ব এই মনীষীদের পেত না। তিনি বলতে চেয়েছেন জন্ম নিয়ন্ত্রণের ফলেই বিশ্বে মনীষীদের জন্ম করুণভাবে কমে গেছে। “তৃতীয় বিশ্বের অভিশাপ মানসিক দূষণ” কিংবা “সফলতার আরেক নাম মনুষ্যত্ব” নামক প্রবন্ধগুলোতেও আমরা তাঁর নানান ভাবনার প্রতিফলন দেখতে পাই।
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি সমাজেরই কয়েকজন ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তাঁর প্রবন্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছেন। তেমনি একটি প্রবন্ধ হল ‘ধরণীর এক ফুটন্ত গোলাপ আহাসান আলী।” প্রবন্ধটিতে তিনি মুর্শিদাবাদের নওদা ব্লকের রঘুনাথপুর গ্রামের কবি আহাসান আলীর জীবন সংগ্রাম ও প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা করেছেন, যাঁর পূর্বপুরুষ ছিলেন সৌদি আরবের রাজ পরিবারের সদস্য। ভাগ্যক্রমে তাঁর পূর্বপুরুষ ভারতের দিল্লিতে আসেন। তিনি বহু ভাষাবিদ ও সুপন্ডিত ছিলেন। মুর্শিদাবাদের নবাব আলীবর্দী খাঁর আহ্বানে তিনি মুর্শিদাবাদে আসেন। নবাব তাঁর রাজকীয় কৃষ্টি-কালচার ও পাণ্ডিত্যের জন্য নবাব পরিবারের শিক্ষক পদে বহাল করেন। সে সময় দিল্লি সম্রাট ছিলেন আওরঙ্গজেব। নবাব আলী বর্দি খাঁ তাঁকে “মীর” উপাধি দেন। অন্য এক প্রবন্ধ “আমার স্মৃতিপটে আঁকা অধ্যাপক নিত্যরঞ্জন দাস।” উল্লেখ্য তিনি বেলডাঙ্গা এস. আর. এফ. কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।
প্রাবন্ধিক মোহাম্মাদ আবুল বাসার ছিলেন মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার বাসিন্দা। ফলত: তিনি পুরো হরিহরপাড়া থানাকে নিজের হাতের তালুর মতো চিনতেন। তাঁর ছিল অসম্ভব পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা। তার দ্বারা তিনি হরিহরপাড়ার মানুষকে নিরীক্ষণ করেছেন খুব কাছ থেকে। সেসব কথাও তিনি তুলে ধরেছেন তাঁর প্রবন্ধে। তেমনি কয়েকটি প্রবন্ধ হল এরূপ, ‘’হরিহরপাড়ার মানব সম্পদের ইতিবৃত্ত”, “স্বাস্থ্য পরিষেবার চালচিত্রে স্বর্ণগর্ভা মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া”। কলম ধরেছেন হরিহরপাড়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধেও।
তিনি ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক। একটি বিদ্যায়তনের প্রধান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। ফলে তার কলমে ফিরে এসেছে বারংবার শিক্ষা প্রসঙ্গ। তেমনি একটি প্রবন্ধ “শিশুর শৈশব ফিরিয়ে দাও”। এই প্রবন্ধে শিশুদের জন্য তাঁর মমতার কথা ব্যক্ত হতে দেখি আমরা। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক। সাহিত্যের নিবিড় পাঠ ছিল তাঁর নিত্য নৈমিত্তিক কর্ম। সেখান থেকেও তিনি রসদ সংগ্রহ করতেন তাঁর প্রবন্ধের। লিখতেন একের পর এক প্রবন্ধ। তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ “কেয়া পাতার নৌকা- হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির রাজমহল, মুক্তিতন্ত্রের মহাসনদ” সহ অন্যান্য প্রবন্ধ।
মহান স্রষ্টার প্রতি ছিল তাঁর অগাধ ও দৃঢ় বিশ্বাস। ইসলামকে তিনি শুধু জানতেন না, তাঁর যাপনেও ছিল ইসলাম। শরীয়তের বিধান ছিল তাঁর জীবন বিধান। সেই প্রত্যয় থেকেও উৎগত হয়েছে প্রবন্ধ। লিখেছেন, ” আল কোরআন ও হাদিস ভিত্তিক হারাম”, “বিশ্বাঙ্গন হতে পরকালের পাথেয় সংগ্রহ করতে হবে মানুষকে”। এরূপ আরো অনেক প্রবন্ধ।
তাঁর লেখা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে কলম, নতুন গতি, পাসওয়ার্ড, মহাপথিক, বোধদয়, সূর্যসেনা, সাঁজাল, পিলসুজ, কুঁড়ি, সঞ্চয়ন সহ বহু পত্রপত্রিকায়।
বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক হিসেবে ছাত্রছাত্রীদের জন্য লিখেছেন “বাংলা ব্যাকরণ ও রচনা”। তাঁর জীবনের নানান উঠা-পড়া, টানা-পোড়েন নিয়ে লিখেছেন “আমার জীবন ইতিহাস”। বইটির পাতায় পাতায় উদ্ধৃত হয়েছে বিভিন্ন কবির বিভিন্ন কবিতার লাইন প্রসঙ্গক্রমে। কোথাও বিধৃত হয়েছে তাঁর নিজস্ব কবিতা। বইটি প্রকাশিত হয় ২০০৮ সালে, বহরমপুরের অচন প্রকাশনী থেকে। হরিহরপাড়ার দস্তুরপাড়ার বাসিন্দা বহু গুণধর কবি- লেখক, সঙ্গীতশিল্পী আমেদ আলীর জীবন ও সাধনার বহু দিক নিয়ে লিখেছেন “ অরণ্যে সজাগ আমেদ আলীর চোখ”। এই বইটিরও প্রকাশক অচন প্রকাশনী।
জীবনজুড়ে অলংকৃত করেছেন অসংখ্য সভা-সমিতির সভাপতির পদ। দিয়েছেন হাজারও বক্তৃতা। সম্মানিত হয়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দ্বারা। সংবর্ধিত হয়েছেন বহু জায়গায়। ২০১৯ সালে পেয়েছেন “পূর্ব ভারত বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ (৩৭বি, শশীভূষণ স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০১২) কর্তৃক প্রদত্ত “হাজার দুয়ারী সম্মান”। হরিহরপাড়া জনকল্যাণ সমিতি আয়োজিত দশম বর্ষ হরিহরপাড়া বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৩ কর্তৃক প্রাবন্ধিককে দেওয়া হয় “মরণোত্তর সম্মান”।
২০২০ সালের ৫ই মে, যখন পুরো পৃথিবী কোভিডের কারণে গৃহবন্দী, সেই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে ৭৮ বছর বয়সে হার্ট এটাকে এই পরিশ্রমী প্রাবন্ধিকের জীবনাবসান হয়। যদিও তিনি দীর্ঘদিন রোগভোগে জর্জরিত ছিলেন।