ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনে নতুন পদক্ষেপ নিল আরব দেশগুলো। কায়রোতে অনুষ্ঠিত জরুরি আরব সম্মেলনে মিসরের দেওয়া বিকল্প পরিকল্পনা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি জানিয়েছেন, এই পরিকল্পনা গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত না করেই উন্নয়ন বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করবে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার বাসিন্দাদের মিসর ও জর্ডানে স্থানান্তর করে উপকূলীয় পর্যটন শহর গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। তবে এই প্রস্তাব আরব বিশ্বে সমালোচনার মুখে পড়ে।
মিসরের দেওয়া নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী—
গাজার বসবাসযোগ্য অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে, যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং পর্যটনের সুযোগ থাকবে। পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজন হবে ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলার।
প্রশাসনিক পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র ও পেশাদার টেকনোক্র্যাটদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) হাতে শাসনভার হস্তান্তরের আগে, সাময়িক সময়ের জন্য মানবিক সহায়তা তদারকি করবে এই কমিটি।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস মিসরের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “গাজার বাসিন্দাদের নিজেদের ভূমিতেই উন্নয়নের সুযোগ দেওয়া জরুরি। আমরা চাই এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাক।”
গাজা শাসনকারী সংগঠন হামাস পরিকল্পনাটিকে “ফিলিস্তিনি জাতীয় প্রতিষ্ঠান গঠনের ইতিবাচক উদ্যোগ” হিসেবে অভিহিত করেছে। একইসঙ্গে, তারা পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে।
এতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হামাস কার্যত গাজার শাসনভার ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজ বলেছেন, “গাজা পুনর্গঠন জরুরি, তবে মিসরের পরিকল্পনায় বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ রয়েছে।”
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পরিকল্পনাকে “বাস্তবতা বিবর্জিত” বলে অভিহিত করেছে।
আরব দেশগুলো গাজার উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের সহায়তায় একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে গাজার জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের পথে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।