মধ্যপ্রদেশের এক কিশোর ‘ওয়্যারউলফ সিনড্রোম’ নামক এক বিরল রোগে আক্রান্ত। এই কারণে সারাজীবন সে উপহাসের শিকার হয়েছে। এই রোগের কারণে তার সারা শরীরে অতিরিক্ত লোম গজায়। ছোট নন্দলেটা গ্রামের আঠেরো বছর বয়সী ললিত পাতিদার মাত্র ৬ বছর বয়সে এই বিরল রোগাক্রান্ত হয়। চিকিৎসা ভাষায় একে হাইপারট্রাইকোসিস বলা হয়। বর্তমানে কিশোরটির বেশ কয়েকটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে এবং দেখা যাচ্ছে তাঁর মুখ এবং হাত সম্পূর্ণরূপে চুলে ঢাকা।
https://www.instagram.com/reel/DG2oz-6vQ5n/?utm_source=ig_web_copy_link
ভারতে ১৮ বছরের এক কিশোর ললিত পাতিদার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নিজের নাম তুলেছেন। কারণটা কী জানেন? ললিত হলেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি লোমশ মুখের পুরুষ। ব্যাপারটা খোলসা করে বলা যাক। তাঁর মুখে প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ২০১.৭২টি লোম রয়েছে। আর এটার কারণ হল এক বিরল রোগ। এর নাম হাইপারট্রাইকোসিস, যা সাধারণত ‘ওয়্যারউলফ সিন্ড্রোম’ নামে পরিচিত।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস জানিয়েছে, মধ্যযুগ থেকে বিশ্বজুড়ে এই রোগের মাত্র ৫০টি এমন ঘটনা পাওয়া গিয়েছে। স্কুলজীবনে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল ললিতকে। প্রথমদিকে সহপাঠীরা তাঁর চেহারা দেখে ভয় পেত। তবে সময়ের সঙ্গে তাকে চিনতে শুরু করলে তারা বুঝতে পারে যে ভেতরে তিনি অন্য সবার মতোই স্বাভাবিক। ললিত বলেন, ‘যখন তারা আমাকে জানতে শুরু করল, কথা বলতে শুরু করল, তখন বুঝল আমি তাদের মতোই। শুধু বাইরের চেহারায় পার্থক্য আছে, কিন্তু ভেতরে আমি একেবারেই আলাদা নই।’
অনেকেই ললিতের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন, যদিও মাঝে মাঝে কিছু মানুষ খারাপ মন্তব্য করেন বলে জানান তিনি। তবে তিনি কখনওই নেতিবাচক কথাকে গুরুত্ব দিতেন না। মুখের লোম নিয়ে যারা সমালোচনা করেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি যেমন আছি, তেমনটাই থাকতে ভালবাসি। আমার চেহারায় কোনও পরিবর্তন চাই না।”
সম্প্রতি ললিত ইতালির মিলানে গিয়েছিলেন একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন শো ‘লো শো দেই রেকর্ড’-এ অংশ নিতে। সেখানে বিশেষজ্ঞরা তাঁর মুখের লোমের ঘনত্ব মাপার জন্য ছোট অংশ শেভ করে পরীক্ষা করেন। অবশেষে যখন তিনি জানতে পারেন যে রেকর্ডটি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নামে নথিভুক্ত হয়েছে, তখন আনন্দে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।