দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত দায়িত্ব নেওয়ার পরই শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক। আম আদমি পার্টি (আপ) অভিযোগ করেছে, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ভারতীয় সংবিধানের রচয়িতা ড: বি আর আম্বেদকর এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী শহিদ ভগৎ সিংয়ের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তাদের জায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং মহাত্মা গান্ধীর ছবি।
আম আদমি পার্টির দাবি, অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে আম্বেদকর ও ভগৎ সিংয়ের ছবি ছিল, যা জনগণের অনুপ্রেরণার প্রতীক হিসেবে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় এসেই তা সরিয়ে ফেলে তাদের প্রকৃত মনোভাব প্রকাশ করেছে।
সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও দিল্লির বিরোধী দলনেত্রী অতিশী এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ পোস্ট করেছেন – “বিজেপির দলিত-বিরোধী মানসিকতা সর্বজনবিদিত। এবার সেটারই প্রমাণ পাওয়া গেল। অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির সব সরকারি দপ্তরে বাবাসাহেব আম্বেদকর এবং শহিদ ভগৎ সিংয়ের ছবি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় এসেই সেই ছবি সরিয়ে ফেলেছে। এতে বোঝা যায়, বিজেপি শিখ ও দলিত-বিরোধী একটি দল।”
অরবিন্দ কেজরিওয়ালও এই প্রসঙ্গে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেনছেন, “বিজেপি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বাবাসাহেবের ছবি সরিয়ে লক্ষ লক্ষ শিখ ও দলিত সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এটা তাদের প্রতি চরম অসম্মান।”
বিতর্কের জবাবে দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত বলেন, “আম্বেদকর বা শহিদ ভগৎ সিংকে অপমান করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তাঁরা আমাদের পথপ্রদর্শক, এবং তাঁদের প্রতি আমাদের অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি দেশের সর্বোচ্চ দুই পদাধিকারী, তাই তাঁদের ছবি রাখা হয়েছে। আপ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।”
বিজেপির অন্যান্য নেতারাও দাবি করেছেন, আম্বেদকর ও ভগৎ সিংয়ের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে, এবং দিল্লির প্রশাসনিক ভবনে তাঁদের সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকবে।
এই ঘটনা নিয়ে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আপ ও বিজেপির রাজনৈতিক সংঘাত নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে, যা আগামী দিনে আরও বড় বিতর্কের জন্ম দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। দিল্লির সাধারণ মানুষও এই বিষয়ে দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ বিজেপির সমর্থনে, আবার কেউ আপের পক্ষ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন—আম্বেদকর ও ভগৎ সিংয়ের ছবি সরানো কি আদৌ উচিত ছিল?