টিডিএন বাংলা:
শনিবার ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোট ছাড়াও বেশ কিছু রাজ্যে উপনির্বাচন ছিল। পশ্চিমবঙ্গে ৬ টি আসনেই জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে উত্তর প্রদেশের ৯টি বিধানসভার উপনির্বাচনে ৭টিতে জয়ী গেরুয়া শিবির। এদিকে সমাজবাদী পার্টি জয়ী মাত্র ২টি আসনে।
আজ যে আসনগুলি বিজেপি জিতেছে, তার মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ হল উত্তর প্রদেশের কুন্ডরকি আসন। মুসলিম অধ্যুষিত ওই আসনটি এ যাবৎ সমাজবাদী পার্টির দখলে ছিল। ওই আসনে ১২ জন প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন। এর মধ্যে ১১ জন মুসলিম প্রার্থী ছিল। একজন হিন্দু প্রার্থী ছিল বিজেপির। ভারতীয় জনতা পার্টির রামবীর সিংহ এসপি প্রার্থীকে ১.৪৪ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে হারান। প্রায় ত্রিশ বছর পরে মুসলিম এলাকায় ভোট কাটাকাটির ফলে জয়ের মুখ দেখল বিজেপি। তবে মুসলিম প্রধান এলাকায় বিজেপির জয় এসপি-র কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বিজেপি প্রার্থী জিতল কি করে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, অন্যান্য রাজ্যের মতো কুন্দরকি কেন্দ্রে হিন্দু-মুসলিম ভোটে মেরুকরণ হয়নি। বরং তুর্কি ও শেখ মেরুকরণে পর্যদুস্ত হয়েছে বিরোধীরা। যার লাভ উঠিয়েছে বিজেপি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, হাজি মুহাম্মদ রিজওয়ানের চেয়ে মুসলিমদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয় ছিলেন বিজেপির জয়ী প্রার্থী রামবীর সিং। পরপর টানা তিনবার হেরেও হাল ছাড়েননি তিনি। রামবীর বুঝে গিয়েছিলেন, মুসলিম ভোট ছাড়া ভোট বৈতরণী পার সম্ভব না। সেজন্য গত দুই দশক ধরে বিপদে-আপদে মুসলিম ভাই-ব্রাদারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। কুন্দরকিতে বিজেপি প্রার্থী হিন্দু ভোট ভোটকে এককাট্টা করার চেষ্টা করেননি। বরং রামবীর সিংকে দেখা গিয়েছে নামাজি ফেজ টুপি পরিধান করে মুসলিম অনুষ্ঠানগুলিতে শরীক হতে। দেখা গেছে আরবি স্কার্ফ পড়ে ঘুরে বেড়াতে। বিজেপি প্রার্থী বুঝে গিয়েছিলেন, ভোটে জিততে গেলে মুসলিম মন পাওয়া খুব জরুরি। তাই দলের দেখান পথ না নিয়ে নিজের অন্তরের দেখানো পথ অনুসরণ করেছেন রামবীর সিংহ। রামবীর বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে দলের লাইনের উল্টো পথে হেঁটে শেখ সম্প্রসায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
মুসলিমদের বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও নিয়মিত যোগ দিয়েছেন রামবীর। আর মুসলিমরা যে কথা দিতে জানে তার ফলও পেয়েছেন হাতেনাতে।
অন্যদিকে গত লোকসভা ভোটে উত্তর প্রদেশের দলিত ভোট বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল বলে ফলাফল দেখে অনেকের মনে হয়েছে। কিন্তু উপনির্বাচনে বিজেপি জয় পেয়েছে কাটেহারি কেন্দ্রে। দলিত অধ্যুষিত ওই আসনে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীকে ৩৫ হাজার ভোটে হারিয়ে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী ধর্মরাজ নিষাদ। গেরুয়া শিবির মনে করছে, কেবল উত্তরপ্রদেশ নয়, হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের ফল থেকে স্পষ্ট, দলিত ভোটারদের বিশ্বাসযোগ্যতা ফের ফিরে পাচ্ছে বিজেপি।