বাংলায় তসলিমা নাসরিনের কোনো জায়গা নেই, জানাল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ

বাংলায় তসলিমা নাসরিনের কোনো জায়গা নেই, এমনটাই জানাল শতাব্দী প্রাচীন, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখা সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ।
জমিয়তের রাজ্য সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম, আমিরে শরীয়ত পশ্চিমবঙ্গের মাওলানা মনজুর আলম কাসিমী, নায়েবে আমির শরীয়ত পশ্চিমবঙ্গের মাওলানা মোঃ হাসিবুদ্দিন খান, কলকাতা জেলা জমিয়তের সম্পাদক জেড আর আরিফ এক লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তসলিমার জায়গা বাংলায় নেই।


জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ বিবৃতিতে লিখেছে,’জৈনক বিজেপি সাংসদ রাজ্য সভায় জোর গলায় বলেছেন যে, তসলিমা নাসরিনকে বাংলায় ফিরিয়ে আনতে হবে। কারণ তসলিমা নাকি বাংলায় কবিতা লিখতে চান,সাহিত্য সৃষ্টি করতে চান। বিজেপি সংসদের এই বক্তব্য দেশজুড়ে সম্প্রচারিত হয়েছে। বাংলার মানুষও শুনেছেন। ইসলাম ধর্ম পূর্ণ, পরিণত ধর্ম। পবিত্র কুরআনে করীম, প্রিয় নবীর (স.)হাদীস শরীফ, তাঁর জীবনদর্শন তথা জীবে দয়া, সহানুভূতি, সততা,নম্রতা, মানবতার শাশ্বত শিক্ষায় ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিষয়।’
সংগঠনটি জানাচ্ছে,’অত্যন্ত বেদনার বিষয়, তাসলিমা নাসরিন মুসলিম নামধারী রমণী। বাংলাদেশের মুসলমানরা তাকে শুধু বিতাড়িতই করেননি তসলিমাকে আল্টিমেটাম ও দিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে তসলিমা কলকাতায় আস্তানা গাড়েন। এবার বাংলার ফ্রেন্ড ও ইলেকট্রিক মিডিয়া তসলিমা নাসরিন দরদী হয়ে তোলপাড় শুরু করে। তসলিমা তার ‘দ্বিখণ্ডিত ‘ বইয়ের ৫১ পৃষ্ঠায় বিশ্বশ্রষ্ঠা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পবিত্রতার উপর কটাক্ষ করেছেন। সেই সাথে আমাদের শেষ নবী(স.)যার উম্মত সারা পৃথিবীতে প্রায় দুই’শ কোটি হে দয়ার নবীর জীবনাদর্শনের উপর আঙ্গুল তুলে নিন্দামন্দ করেছেন। নবীজির স্ত্রী গনও (যাঁরা মুসলিম জাহানের মা ) তার কটুক্তি থেকে বাদ যাননি।


আশা রাখি, বাংলার মানুষ ও মুসলমানদের মনে আছে যে, সিপিএম জামানাই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মুসলমানদের যৌথ নেতৃত্বে কলকাতার মেট্রো চ্যানেলে এর প্রতিবাদে সব অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জমিয়তে উলামার সভাপতি জনাব মাওলানা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সাহেব উক্ত সাভার সভাপতিত্ব করেন। জনাব চৌধুরী সাহেব এতে পূর্বে ‘দ্বিখণ্ডিত’ বইয়ের পৃষ্ঠাগুলির উদ্ধৃত করে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে প্রেরণ করেন যাতে মুখ্যমন্ত্রী অনুধাবন করতে পারেন যে, তসলিমা নাসরিন কত নিজ ইসলাম বিদ্বেষী। ধর্মতলায় ঈমান প্রিয়, ইসলাম প্রিয়, আল্লাহ তার নগর প্রেমিক ৫০হাজারের অধিক মানুষের জড়ো হয়ে আওয়াজ তুলেছিলেন: তসলিমা হটাও, মুসলমানদের ঈমান বাঁচাও। ওই সভার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কারণে কলকাতা পুলিশ তাকে রাতারাতে দিল্লিতে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়। আমাদের যতটুকু জানা, পুলিশের সাহায্যে দিল্লি যাওয়ার পর তসলিমা প্রণব মুখার্জির সহায়তায় দিল্লির বুকে বিলাসবহুল ফ্লাট সহ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছে।”


জমিয়ত লিখেছে,”আমরা যার পর নাই আতঙ্কিত। তাসলিমা নাসরিনকে পশ্চিমবাংলায় প্রত্যাবর্তনের প্রশ্নে ইসলাম বিদ্বেষকে পুঁজি করে যে বা যারা ময়দানে নেমেছেন তারা আগুন নিয়ে খেলছেন। বাংলার মুসলমান তসলিমা নাসরিনের ছায়া বাংলায় দেখতে চায় না। এর ফলে অশুভ কিছু ঘটে গেলে তার দায় তাদেরকেই নিতে হবে।”

সংগঠনের নেতৃত্ব কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন,’পশ্চিমবাংলার প্রতিটি জেলা ও ৪৫০ টি জমিয়তের শাখা সাংগঠনের নিকট আমাদের আবেদন, সজাগ ও সতর্ক হোন। ইসলাম বিদ্বেষী তসলিমা নাসরিন যাতে বাংলার বাংলায় পা রাখতে না পারে সে বিষয়ে নজর রাখুন। এ বিষয়ে জমিয়তের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মোতাবেক যথাবিহিত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।’

Exit mobile version