আমাদের দেশে এতো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও শাসক দলের প্রধান কোনোদিন বৈঠক করেননি। আখলাক, জুনাইদ, পেহলু খান, তাবরেজ, সাবির, আফরাজুল থেকে দিল্লি- সম্বল কিংবা ধরুন বিতর্কিত আইনগুলি নিয়ে অন্দোলন, সরকার প্রধান একদিনও সংখ্যালঘু নেতাদের কাছে ডেকে কথা বলেননি। তাদের মাথায় হাত রাখেননি।
মনিপুর এখনো শান্ত হয়নি। শিখ সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে কৃষক অন্দোলনে কতজন প্রাণ দিয়েছে তার হিসাব নেই। সিএএ আন্দোলনকারীদের অনেককে বিনা বিচারে জেলে পচতে হচ্ছে। এদেশে কত যুবককে যে বছরের পর বছর বিনা দোষে জেলে রাখা হয়, কীভাবে যে চাকরী থেকে বঞ্চিত করা হয়, ধর্ম সংসদে ঘৃণা ভাষণ দিয়ে উস্কানি দেওয়া হয়, বলিষ্ঠ লেখনীর জন্য সিদ্দিক কাপ্পান, স্বামী স্টান ফাদার, মোহাম্মদ জুবাইরদের টার্গেট করা হয়, নাজিব আহমেদকে নিখোঁজ করা হয়, সেই তালিকা দীর্ঘ। ভালো নেই সংখ্যালঘু সমাজ। কিন্তু কে শুনবে তাদের কথা? সরকারের অনেকেই অনুপ্রবেশ, লাভ জিহাদ, তালাক, ওয়াকফ নিয়ে ভুলভাল বকছেন। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ দেশের একটি সরকারে মুসলিম কোনও মন্ত্রী নেই, বিধান সভায় বিরোধী দলের মুসলিম বিধায়ক নেই, এরা আবার সংখ্যালঘু প্রেম দেখায়!
“সেই সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দালালি করেছে, আর এখন নিজের বন্ধু কোম্পানির কাছে দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। তাই ভারতবাসীকে মুক্তির পথ খুঁজতে হবে”
আসলে এরা নিজেরাই বিভ্রান্ত। শান্তি সম্প্রীতির পাঠ থেকে তারা বহু যোজন দূরে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে তাদের চিন্তা নেই। গোটা দেশের শিক্ষা প্রায় শেষের দিকে, বেকারত্ব তীব্র আকার ধারন করেছে, ব্যবসায় মন্দা- সরকারের এইসবের দিকে নজর নেই। আমরা নীরব দর্শক হয়ে দেখছি। মাঝে মাঝে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কাহিনী পড়ছি আর ভাবছি, এটাই কী সেই দেশ যার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন?
দলিত, আদিবাসী, মতুয়ারাও মুক্তি পায়নি। আজ মতুয়াদের নাগরিকত্বের প্রমাণ চাইছে। আর দলিতদের যে কী কষ্টের মধ্যে থাকতে হয়, কেবল মাঝে মাঝে খবরের হেডলাইন দেখলে কিছুটা বোধগম্য হয়। এইসবের জন্য দায়ী বর্ণবাদী মানসিকতা। দেশের জন্য এদের কোনো অবদান নেই। সেই সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দালালি করেছে, আর এখন নিজের বন্ধু কোম্পানির কাছে দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। তাই ভারতবাসীকে মুক্তির পথ খুঁজতে হবে।