বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা প্রতি বছর একটি রমজান পালন করেন এবং একটি ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন। তবে ২০৩০ সাল হবে এক ব্যতিক্রমী বছর, যেখানে মুসলমানরা এক বছরেই দু’বার রমজান ও দুটি ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন। এছাড়া, থাকবে ঈদুল আজহাও। অর্থাৎ, ওই বছরে মুসলমানরা তিনটি ঈদ উদযাপন করবেন, যা এক বিরল ঘটনা! ২০৬৩ সালেও একই বছরে দুই রমজান হবে।
কেন এক বছরে দুবার রমজান? ইসলামিক বর্ষপঞ্জি চাঁদের গতির ওপর নির্ভরশীল। হিজরি বর্ষ চান্দ্রবর্ষপঞ্জিকা অনুসরণ করে। তাই চন্দ্রের হিসাবে বছরে ৩৫৪ থেকে ৩৫৫ দিন হয়। এদিকে সৌরবর্ষ হয় ৩৬৫ দিনের। এতে উভয়ের মধ্যে ১০ দিনের ব্যবধান হয়। ফলে প্রতি ৩০ বছর পর গ্রেগরিয়ান এক বছরে দুইবার রমজান পড়ে। বছর ঘুরে উত্তর গোলার্ধে রোজার সময় কমতে থাকে। এই স্থানে রোজার সময় ২০৩২ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত কমতে থাকবে। ওই বছর রমজান মাস পুরোপুরি শীতের মধ্যে পড়বে। আর তখনকার সময়টি হবে বছরের সংক্ষিপ্ততম সময়। এরপর পুনরায় রোজার সময় বাড়তে থাকবে এবং গ্রীষ্মের সময়ে এসে পড়বে। ওই সময়টি হবে বছরের দীর্ঘতম সময়। ২০২৮ সালে তীব্র শীতের সময় রমজানের রোজা রাখতে হবে। আবার ২০৪৪ সালে প্রচণ্ড গরমের মৌসুমে রমজান হবে। ২০৩০ সালেও এমনটাই ঘটবে।
চন্দ্র বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী—প্রথম রমজান শুরু হবে ৫ জানুয়ারি ২০৩০দ্বিতীয় রমজান শুরু হবে ২৬ ডিসেম্বর ২০৩০এর অর্থ, ওই বছর মুসলমানরা দুবার রমজান পালন করবেন এবং দুটি ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন।
২০৩০ সালে মুসলমানরা তিনটি ঈদ উদযাপন করবেন। এটা ঘটে ৩২ বছর পর পর। আবার যে বছর জানুয়ারির প্রথম ১০ দিনের মধ্যে ঈদুল আজহা হবে, সে বছর দুটি কোরবানির ঈদ এবং একটি ঈদুল ফিতর পালিত হবে। ১৯৬৮ সালে এবং ২০০০ সালে ৩ বার ঈদ হয়েছিল।শেষ কবে ঘটেছিল এমন ঘটনা?এক বছরে দুবার রমজান হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে এমনটি ঘটেছিল, যখন জানুয়ারির শুরুতে এবং ডিসেম্বরের শেষে দুটি রমজান মাস পড়েছিল। একইভাবে, ওই বছরও দুটি ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছিল।
বিভিন্ন দেশে দিনের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী রোজার সময় পরিবর্তিত হয়। যেমন—আইসল্যান্ড ও গ্রিনল্যান্ডের মতো উত্তরাঞ্চলের দেশগুলোতে মুসলমানরা ১৬ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় রোজা রাখবেন।উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে ২০৩১ সাল পর্যন্ত রোজার সময় ধীরে ধীরে কমতে থাকবে, আর দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোতে ধীরে ধীরে বাড়বে।
ঐতিহাসিক তাৎপর্য এক বছরে দুইবার রমজান হওয়া শুধু জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনাই নয়, বরং এটি মুসলিম বিশ্বে একটি আধ্যাত্মিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। ২০৩০ সালে মুসলমানরা দুইবার রমজানের পবিত্রতা উপভোগ করবেন, দুইবার ঈদের খুশি উপভোগ করবেন এবং সারা বছর দ্বিগুণ ইবাদতের সুযোগ পাবেন। এটি মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি বিরল এবং আনন্দময় বছর হতে চলেছে!