ইসরাইলের জনগণ পথে নেমেছে, নেতানিয়াহুর বাড়ির সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ১২

নেতানিয়াহুর বাসভবনের কাছে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ। ছবি: টাইমস অফ ইসরাইল

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র জনরোষ প্রকাশ পেয়েছে জেরুজালেমের রাজপথে। বুধবার সকালে হাজার হাজার মানুষ শিন বেত প্রধান রোনেন বার ও অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারভ-মিয়ারাকে বরখাস্তের চেষ্টার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে। একইসঙ্গে গাজায় যুদ্ধ পুনরায় শুরুর কারণে বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ায় আন্দোলনের মাত্রা আরও তীব্র হয়।

বিক্ষোভকারীদের মিছিল মোৎজা এলাকা থেকে শুরু হয়ে পার্লামেন্ট (কেনেসেট) ও পরে আজ্জা স্ট্রিটে নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে এসে জমায়েত হয়। পুলিশের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়, জলকামান ও বলপ্রয়োগের মাধ্যমে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় অন্তত ১২ জন গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিক্ষোভের অন্যতম নেতা শিকমা ব্রেসলার বলেন, “এখনই এই পাগলামির শেষ হওয়া দরকার, না হলে আমাদের উদ্ধারের কেউ থাকবে না, এমনকি আমাদের দেশও থাকবে না।”

বিক্ষোভকারীদের হাতে “ধ্বংসাত্মক সরকার আর নয় দরকার” লেখা ব্যানার দেখা গেছে। তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার পাশাপাশি বন্দিদের মুক্তির জন্য সমঝোতার আহ্বান জানায়।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে। এক ট্যাক্সিচালক বিক্ষোভকারীদের ওপর গাড়ি চালিয়ে দেন, এতে একজন আহত হন। পরে চালককে গ্রেফতার করা হয়।

কেনেসেটের সামনে এক পর্যায়ে ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টির প্রধান বেনি গান্টজকে ঘিরে বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এক বিক্ষোভকারী তাকে “বিশ্বাসঘাতক” বলে সম্বোধন করেন, যা উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি করে। গান্টজ পাল্টা বলেন, “৪০ বছর আমি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, আর তুমি আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলছো?”

গান্টজ পরে এক টুইটে বলেন, “বেশিরভাগ বিক্ষোভকারী ইসরায়েলের প্রকৃত দেশপ্রেমিক, তবে কিছু উগ্রবাদী আছেন যারা নেতানিয়াহুকে ঘৃণা করতে গিয়ে দেশের স্বার্থকে ভুলে গেছেন।”

এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রধান ইয়াইর গোলান। তিনি বলেন, “আজ যারা রাস্তায় নেমেছেন, তারা ইসরায়েলের প্রকৃত প্রেমিক।”

নেতানিয়াহুর সরকার শিন বেত প্রধান ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা আরও বিশাল আন্দোলনের জন্ম দিতে পারে। পাশাপাশি, গাজায় যুদ্ধ পুনরায় শুরুর কারণে বন্দিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ইসরায়েলের রাজনীতিতে নতুন মোড় আনবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সূত্র: টাইমস অফ ইসরাইল

Exit mobile version