এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জামাআতে ইসলামী হিন্দ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ সা’দাতুল্লাহ হুসাইনি গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং আমেরিকার সহায়তা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদাসীনতাকে তিরস্কার করেছেন।
মিডিয়ার কাছে এক বিবৃতিতে জামাআত সভাপতি বলেন, “আমরা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম যুদ্ধের সাম্প্রতিক পুনরারম্ভের তীব্র নিন্দা জানাই, যা রমজানের সেহরির সময় ইচ্ছাকৃতভাবে শুরু করা হয়েছে। এই ভয়াবহ ও অমানবিক কর্মকাণ্ড, যেখানে ৪০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ১৭০-এর বেশি নিরপরাধ শিশু রয়েছে, এটি ইসরায়েলি শাসনের মানবজীবন ও আন্তর্জাতিক বিধিবিধানের প্রতি সম্পূর্ণ অবজ্ঞার প্রকাশ। এই আক্রমণের নিষ্ঠুরতা, যা যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদনে পরিচালিত হয়েছে, তা যেকোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির অর্থহীনতা প্রকাশ করে এবং ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পশ্চিমাদের ব্যর্থতাকে উন্মোচন করে।”
জামাআতে ইসলামী হিন্দ-এর সভাপতি আরও বলেন, “পবিত্র সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক বেসামরিক হতাহতের উদ্দেশ্যে পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ইসরায়েলি হামলা একটি ভয়ংকর আগ্রাসন, যা ন্যায়বিচার ও মানবিকতার সব নীতিকে লঙ্ঘন করে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমারা আবারও শান্তির রক্ষক হিসেবে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে, বরং তারা নিরপরাধ বেসামরিকদের গণহত্যার প্রতি চোখ বুজে থেকেছে এবং ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে শুধু আনুষ্ঠানিক নিন্দার বাইরে এসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাদের এই অবহেলা ও নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করবে যে, তাদের শান্তি ও ন্যায়বিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতি শুধুই লোকদেখানো।”
সৈয়দ সা’দাতুল্লাহ আরও বলেন, “ফিলিস্তিনের সংগ্রাম শুধুমাত্র একটি ভৌগোলিক বিরোধ নয়, বরং এটি স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও অস্তিত্বের লড়াই। জামাআতে ইসলামী হিন্দ ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছে এবং ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘকে আহ্বান জানাই, যাতে তারা ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। আমরা গাজায় বেসামরিক হত্যার বিষয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্বেগ প্রকাশকে স্বাগত জানাই এবং কিছু রাজনৈতিক নেতাদের বিবৃতির প্রশংসা করি। তবে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, যেন তারা বাস্তব ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই বিনা উসকানিতে চালানো সহিংসতা বন্ধ করতে পারে এবং যুদ্ধবিরতির কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করে। আমাদের অবশ্যই আমাদের কণ্ঠস্বর তুলতে হবে, ন্যায়বিচার দাবি করতে হবে এবং এমন একটি ভবিষ্যতের জন্য কাজ করতে হবে যেখানে ফিলিস্তিনিরা মর্যাদা, শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে জীবনযাপন করতে পারে।”