স্তন খামচে ধরা এবং পাজামার ফিতে খুলে ফেলা ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা নয়, বরং এটি শারীরিক নিগ্রহ—এমন রায় দিয়েছেন এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি রাম মনোহর নারায়ণ মিশ্রা। এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খোদ কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী। তিনি বলেন, “এটি সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত, যা সমাজে ভুল বার্তা দেবে।”
উত্তরপ্রদেশের কাশগঞ্জে ২০২১ সালে ১১ বছরের এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তারা মেয়েটিকে ফুঁসলে রাস্তায় নিয়ে যায় এবং কালভার্টের কাছে জোর করে টেনে নিয়ে গিয়ে তার স্তন খামচে ধরে ও পাজামার দড়ি খুলে ফেলে। নাবালিকার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
কাশগঞ্জের নিম্ন আদালত ওই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পকসো আইনে মামলা করে। কিন্তু এলাহাবাদ হাই কোর্ট সেই মামলা খারিজ করে দেয় এবং বিচারপতি মিশ্রার বেঞ্চ ৩৫৪-বি ধারায় অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ ও ৯/১০ পকসো ধারায় শারীরিক নিগ্রহের মামলা চালানোর নির্দেশ দেয়।
এই রায়কে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে বিচারপতির সমালোচনা করা হচ্ছে।
তৃণমূল সাংসদ জুন মালিয়া বলেছেন,
“এটা গোটা দেশের মহিলাদের অসম্মান। এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হওয়া উচিত।”
অন্যদিকে আম আদমি পার্টির সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল মন্তব্য করেছেন,
“এ ধরনের মন্তব্য কোনও বিচারপতি করতে পারেন, ভাবতেই অবাক লাগছে।”
আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী বলেছেন,
“এটি একেবারে ভুল রায়। সুপ্রিম কোর্টের উচিত সংশ্লিষ্ট বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।”
এই বিতর্কিত রায়ের ফলে নারী সুরক্ষা আইন ও বিচার ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করে কি না।