মানব সভ্যতা কি তার শ্মশান-শয্যায়? - TDN Bangla
  • About Us
  • Privacy Policy
  • Contact Us
Tuesday, June 24, 2025
  • Login
No Result
View All Result
TDN Bangla
  • হোম
  • রাজ্য
  • দেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়
  • হোম
  • রাজ্য
  • দেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়
No Result
View All Result
TDN Bangla
No Result
View All Result
ADVERTISEMENT

মানব সভ্যতা কি তার শ্মশান-শয্যায়?

রাকিবুল মালিথ্যা টিডিএন বাংলা
February 26, 2025
| সম্পাদকীয়

বনবাণী ভট্টাচার্য

সেদিন, দু’দশক আগে, ছোট্ট গ্রামটা আহ্লাদে-আনন্দে ঝলমলিয়ে উঠেছিল। হোক না আমেরিকান সুনীতা উইলিয়ামস, কিন্তু সুনীতার শিকড় তো ঝুলসান গ্রামেই। তাই, সুনীতার মহাকাশ উড়ানের সাফল্যে গুজরাটের ঝুলসানের বুক গর্বে ফুলে উঠেছিল, আর এখন তাদের মেয়ে সুনীতা ’২৪ সালের আগস্ট থেকে মহাকাশের স্পেস স্টেশনেই আছে! ফিরে আসা অনিশ্চিত, তখনও কেউ কেউ হয়তো গ্রামের জাগ্রত দেবী দোলামাতার মন্দিরে তার নিরাপদ ফিরে আসার জন্যে প্রার্থনা করেন অপরিসীম উদ্বেগে। তারও মধ্যে গৌরবের সুখটুকু আছে। দোলামাতায় আজও ভিড়, প্রেসিটেন্ট ট্রাম্প যে ৩৩ জনকে ইতিমধ্যেই তাড়িয়ে দিয়েছেন এবং আরও যাদের তাড়াবেন তাদের নিরাপদ ভবিষ্যতের প্রার্থনায়।


গুজরাটের ঝুলসানের চোখে জল — আকাশ দুশ্চিন্তার মেঘে ছাওয়া যে ১০৪ জনকে মার্কিনী সি-১৭ যুদ্ধ বিমান প্রায় অর্দ্ধমৃত অবস্থায়, অমৃতসরে কয়েকদিন আগে নামিয়ে দিল, তার ৩৩ জন তো ওদের গুজরাটেরই। কাজের আশায়, আরও ভালভাবে থাকার চাহিদায় ভারতীয়রা ছুটছে মার্কিন দেশে সরাসরি অথবা বাঁকা পথে। ‘স্বপ্নের দেশ’ আমেরিকার মাটিতে যেমন তেমন, কিন্তু এমন অমানবিক আচরণ একটা সভ্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে হতে পারে তা কি দুঃস্বপ্নেও তারা ভাবতে পেরেছে? তারা তো এককথায় বলা যায় নরক থেকে ফিরে এসেছে। হাতে-পায়ে শিকল বেঁধে গোটা যাত্রাপথ তাদের নিয়ে আসা হয়েছে। খাবার নেই, নেই প্রায় জলও। প্রকৃতির ডাক এড়াবার জন্যে এই যাত্রীরা নিজেরাই এসব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কোনোরকমে প্রাণটুকু নিয়ে ফিরেছে তারা দেশে। তাদের মধ্যে ৪ বছরের শিশুও ছিল। সেই নিষ্পাপ শিশুরাও অমানবিকতার হাত থেকে রেহাই পায়নি। অমৃতসর বিমানবন্দরে ভয়ঙ্কর অপরাধে অপরাধীর মতো শিকলপরা ১০৪ জন বন্দি যখন নামল, তখন তা এদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং তার ঘনিষ্ট বন্ধু মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্মৃতিপটে দেখা দিয়েছিল কি। ১৬১৯ সালে ভার্জিনিয়ার এক বন্দরে ডাচ জাহাজে ধরে আনা ২০ জন হাতে পায়ে শিকল বাঁধা শক্ত-সমর্থ আফ্রিকার সেই কালো মানুষগুলোকে, যাদের দিয়েই ব্রিটিশের উপনিবেশ আমেরিকায় দাস প্রথার মতো ঘৃণ্য-সংস্কৃতির শুরু। অষ্টাদশ শতকে সেই ২০ জন ক্রীতদাসের সংখ্যা ৬০-৭০ লাখে পরিণত হলো, সাদা চামড়ার প্রভুরা তাদের সাথে যে অমানুষিক অত্যাচার করত, ট্রাম্পের নিজেকে কি কখনও তাদেরই যোগ্য উত্তরসূরি বলে মনে হয়নি? বর্বর ঐতিহ্যের ধারক-বাহক বলে আত্মপ্রসাদ লাভ করেননি? মনে পড়েনি, ‘আঙ্কল টমস কেবিনের’লাথিতে মুখ থেঁতলে যাওয়া, বেতের আঘাতে রক্তাক্ত পিঠ, ঘেটোয় বন্দি আফ্রিকান নিগারদের?

আমেরিকায় দাসেদের প্রতি বৈধ অধিকারের মতো যে নিষ্ঠুর-অমানুষিক অত্যাচার সাদা চামড়ার ‘কবচের’বলে সুসভ্য জাতির অহঙ্কারে সাহেবরা করেছে, তা তো মানব জাতি, মানব সভ্যতার চিরকালীন কৃষ্ণগহ্বর — চিরস্থায়ী কলঙ্ক। ঐ ১০৪ জন তো ওদের ঘোষিত দাসও নয়, যে দাস-অধ্যুষিত পুরানো আমেরিকার পশু জেগে উঠেছে, যথেচ্ছ অমানুষিক আচরণের জন্যে? ওরা তো কেউ অপরাধী নয়। তবে অপরাধীকেও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে শাস্তি দেওয়া যায় না। বছর ৩০-এর খুশবু প্যাটেলের এই যাত্রার আতঙ্ক কাটেনি। এক কঠিন ট্রমায় রয়েছে সে। ভাই বরণ জানিয়েছে ওকে ভয়ানক নির্যাতন করা হয়েছে, ১৮০ ঘণ্টা ধরে হাত পা বাঁধা। একটু সময়ের জন্যে খুলে দেওয়ার কাকুতি-মিনতিতেও ওদের মন গলেনি। শারীরিক ও মানসিকভাবে ওরা বিপর্যস্ত বলেছেন হরবিন্দর। কেন খুশবু-হরবিন্দর-সুখপালরা আজ ট্রমায় আচ্ছন্ন স্বপ্নের দেশ থেকে ফিরে? দাগী আসামির শাস্তি কি ওদের প্রাপ্য? মহামান্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিশ্ব বিবেকের কাছে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।

জবাব দিতে হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেও। ন্যূনতম দায়িত্ব বোধ থাকলে ৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার টেক্সাস বিমানবন্দর থেকে ২০৫ জন ভারতীয় অভিবাসী পাঠানোর খবর হলেও অমৃতসর বিমানবন্দরে সেই সংখ্যা কি করে ১০৪ জন হয়ে গেল তার হদিশ তিনি করতেন। নাকি মনে করেছেন ১৩২ কোটি মানুষের দেশে ১০০ জন মানুষের খোঁজ না থাকলে, ভারত অথবা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কি এসে যায়! তার থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধুত্ব বিনিময়ে আমেরিকায় ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ‘বিশ্বগুরু’হবার প্রকল্প বেশি জরুরি। তিনি তো ইতিমধ্যেই ২০ হাজার ভারতীয় পরিযায়ী শ্রমিককে অবৈধ অভিবাসী বলে চিহ্নিত করে বন্দি শিবিরে রাখার পরে দফায় দফায় ভারতে পাঠানোর ব্যাপারে ঘনিষ্ট সহযোগিতা করবেন বলে একরকমের মুচলেকাই দিয়ে দিয়েছেন। গোটা দেশবাসী ক্ষুব্ধ আহত ট্রাম্প শাসনের নজিরবিহীন এই অমানুষিক আচরণ এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা ও নীরব সমর্থনে। অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানও মার্কিন বন্দি শিবির এবং মালবাহী যুদ্ধবিমানে ভারতীয়দের প্রতি অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পাঞ্জাবের প্রবাসী বিষয়ক মন্ত্রী এবং বিহারের সিপিআই (এমএল) সাংসদ। কিন্তু হিসাবের বাইরে গাছের পাতা নড়লেও যিনি প্রতিবাদ না করে পারেন না, এরাজ্যের সেই মুখ্য প্রশাসক আশ্চর্যজনকভাবে সহিষ্ণু। ভারতীয়রা যেমন নিজেদের অপমানিত বোধ করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে এই অভিবাসন নীতিতে, তেমনই মহান ভারতবর্ষের মাথায় বসে থাকা এক আত্মমর্যাদাবোধহীন, দেশের সম্মানের প্রতি উদাসীন শাসকের অবস্থানে। প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতি তাকে বিশ্বাসঘাতকতা করলেও মানুষ বিস্মৃত নয়। এই ভারতেরই সামান্য এক রাজা বন্দি পুরু, দ্বিগ্বিজয়ী বীর আলেকজান্ডারকে বলেছিলেন, তিনি আলেকজান্ডারের কাছ থেকে ‘রাজার সাথে রাজার আচরণই প্রত্যাশা করেন। তোয়াক্কা করেননি প্রাণের, পরোয়া করেননি ক্ষমতার। ভারতবাসীর লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায়। কলম্বিয়ার মতো ছোট ছোট দেশ তাদের অভিবাসীদের প্রতি এই নির্যাতন ও গবাদি পশুর মতো অমানবিক আচরণের প্রকাশ্য নিন্দা ও প্রতিবাদ করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে, যে প্রতিবাদ করার হিম্মতটুকুও ছাপ্পান্ন ইঞ্চি বুকের ছাতিতে অনুপস্থিত।

দেশে দেশে সহযোগিতা বাঞ্ছনীয়, অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক। কিন্তু অবশ্যই প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক নয়, নয় দয়া দাক্ষিণ্য অনুকম্পারও। ভারতীয় মেধা, শ্রম অবশ্যই বিশ্বের সম্পদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে তার বৈভবে, ভারতীয়দের মেধা ও শ্রমের অবদান, নিশ্চয়ই তাদের হিসাব আছে। কিন্তু তাদের অভিবাসন-অবস্থানে এর প্রতিফলন তো নয়ই বরং তা অস্বীকারের ছবি ঐ প্রায় নাৎসি ক্যাম্পের মতো বন্দি-শিবির এবং ক্রিমিনাল অফেন্সে অভিযুক্ত গবাদিপশুর মতো মালবাহী যুদ্ধ বিমান। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন জেতার ‘ট্র্যাম্প কার্ড’ ছিল অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন এবং তার জন্যে অভিবাসীরা তাদের গৃহপালিতদের খেয়ে নেয় গোছের নিম্নমানের বিদ্বেষের আগুন ছড়াতেও কসুর করেননি তিনি। অথচ ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকনমিক রিসার্চ এবং অন্যান্য অপরাধের ক্ষত্রে এদের রেকর্ড প্রায় শূন্য, নয় সামান্য। আর তাদেরই সাথে হিংস্র অপরাধে বন্দিদের মতো আচরণ করা হচ্ছে। ওদেশের বিশেষজ্ঞ এবং অর্থনীতিবিদদের মতে এই তাড়িয়ে দেওয়ায় আমেরিকায় শ্রমের ঘাটতিও দেখা দেবে। আর এখন ক্ষমতা ধরে রাখতেও তেমনি উদ্ধত-কদর্য-বিদ্বেষ পূর্ণ আওয়াজ— ‘‘ভিনদেশি অনুপ্রবেশকারীদের জন্য মানবাধিকার বিধি মান্য করার বাধ্যবাধকতা সরকারের নেই।’’ কেন? অবৈধ অভিবাসীরা তো মানুষই এবং মানবাধিকার মানুষ মাত্রের আছে। তাহলে কি মিথ্যে বিশ্বকবির প্রত্যয়— ‘‘সব ঠাঁই মোর ঘর আছে’’?

মেগালোম্যানিয়াক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একই ঔদ্ধত্যে এই পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে নির্লজ্জ ঘোষণা করেছেন— ‘‘গাজা দখল করব”। যে পৃথিবীতে সাম্রাজ্যবাদী লিপ্সা চরিতার্থ করতে, নেপোলিয়নকে নির্জন কর্সিকা দ্বীপে শেষ জীবন কাটাতে হয়েছে, ফ্যাসিস্ত মুসোলিনির নগ্ন দেহ মিলানের গাছে ঝোলানো হয়েছিল আর হিটলারের নিস্তার ঘটেছিল আত্মহত্যায়। তবুও শ্রমশক্তির ঘাটতি এবং যুদ্ধ-বিমানের বিপুল বাড়তি খরচের ক্ষতি স্বীকার করেও, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’এবং ‘মাগা’বা ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ স্লোগান মাথায় রেখেও মাননীয় ট্রাম্প কেন এ পথে গেলেন? এও তার বিশ্বজয়ের পথই তৈরি করার প্রয়াস। ক্ষমতার চূড়ায় থেকে বিশ্ব শাসন নিশ্চিত করা।

রক্তের স্বাদ পাওয়া বাঘ সবে হালুম করেছে। অভিবাসী নীতির এই নজিরবিহীন নতুন প্রকল্প নিয়ে ছোট বড় যে দেশই মুখ খুলেছে অথবা প্রতিবাদ করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন তার বিরুদ্ধেই খড়্গহস্ত — চড়া দরে শুল্ক বসানো তার সামান্য নমুনা। রক্তমুখী বাঘ ইতিমধ্যেই নখ-দাঁত বার করে আঁচড়াতে কামড়াতে শুরু করেছে। চীনের ‘বেল্ট এন্ড রোড’প্রকল্প থেকে পানামার সরে আসা তারই নজির। পানামা খালের সমস্যা আমেরিকার এক বহু পুরানো রোগ। নতুন করে ছোট্ট দেশটাকে চাপে রেখে তাকে বশীভূত করে, আমেরিকা ঠান্ডা যুদ্ধের যুগে ফিরতে চাইছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আবদার, কানাডার মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে তার ৫১তম প্রদেশে পরিণত করা। তার ১৭ হাজার ২০০ কোটি ব্যারেল তেলের মালিক হওয়া আমেরিকার পক্ষে খুবই জরুরি, কারণ তেল যার টাকা তার, টাকা যার আধিপত্য তার, আধিপত্য দেয় বিশ্ব শাসনের অধিকার। সেই আধিপত্যবাদের শিকার হতে চলেছে ইগলুর দেশ শ্বেত-শুভ্র গ্রীনল্যান্ড, যার তলায় ঘুমিয়ে আছে অমূল্য সব খনিজ সম্পদ। পারছেন না নিজের পিছনের উঠোন ভেনেজুয়েলাকে কিছুতেই বাগে আনতে, যতক্ষণ দেশের রাশ বামপন্থী সরকারের হাতে। আর লাতিন আমেরিকায় সহজে খুঁজে পাচ্ছে না জুতসই একটা প্রভূভৃত্য চৌকিদার ‘ইজরায়েল’।


আরব দুনিয়াকে কবজা করতে আরও মনোযোগ প্রয়োজন। তাই এবার মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্রটাই পালটে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আমেরিকা, নতুন নতুন ছক কষছে পশ্চিম এশিয়াকে ছিন্নভিন্ন করতে আরব ঐক্য ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে। তারই জন্যে আরব দুনিয়াকে শেষ ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের প্রধান বাসার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে সিরিয়ায় আমেরিকা তার দুই বাহু ইজরায়েল আর তুরস্ককে দিয়ে ইসলামিক সন্ত্রাবাদীদের শিখণ্ডী করে সেকুলার রাষ্ট্র সিরিয়াকে বশংবদে পরিণত করতে সফল হয়েছে। এখন আবার হুঙ্কার — ‘গাজা দখল করব’। ৬২ হাজার (মতান্তরে ৭০-৮০) ‘মৃত্যুভূমির’উপরে ট্রাম্প তৈরি করবেন ‘‘রিভিয়েরা অব দ্য মিডল ইস্ট”, যে শহরে আর প্যালেস্তিনীয়দের ঢুকতে দেওয়া হবে না। গাজা থেকে প্যালেস্তিনীয়দের সাফ করে সমুদ্র পারের জমিতে যে অপূর্ব বেহেস্ত রচনা হবে সেখানে ওরা যে বেমানান। এথনিক ক্লিনজিং-এর মতো কদর্য দাম্ভিক উচ্চারণের পরও, গাজা দখল করার অসভ্য-বর্বর ঔদ্ধত্য প্রদর্শনের পরেও, প্রেসিডেন্টের জিহ্বা নিজের জায়গাতেই বহাল আছে, এটাই মানব সভ্যতার সীমাহীন দৈন্য। বিশ্ব বিবেকের প্রশ্ন, সত্যিই কি মানব সভ্যতা তার শ্মশান শয্যায়?


গাজায় এখন সংঘর্ষ বিরতি। গৃহহারা প্যালেস্তিনীয়রা কেউ সপরিবারে, কেউ স্বজনহারা হয়ে ঘরে ফেরার আনন্দে রাস্তায় — তারই মাঝে এই হুঙ্কার। না ওরা যাবে না মিশরে, যাবে না অন্যত্র। ওরা যে ঘরপোড়া, ওরা জানে, এবার গেলে অতীতের মতো নিজের ঘরে ফেরা সহজ হবে না। তাই দেশপ্রেমী প্যালেস্তিনীয়রা নিজেদের ভালো নিজেরাই বুঝে নেবে। দশক দশক যুদ্ধ করে স্বাধীনতার জন্যে যারা বিনিদ্র রাত জাগে, তারা জানে যুদ্ধ করেই বাঁচতে হবে— বাঁচতে গেলে মরতে হবে। প্রয়োজন হলে এক নয়, নদীকে নদী রক্ত দিতে প্রস্তুত ওরা জেতার জন্যে। ওদের জিত অনিবার্য, কারণ ওরা দখলদার নয়, স্বাধীনতার সেনানী, সত্যের প্রহরী।


কিন্তু ভারতের প্রহরীর বন্ধুকৃত্যে ভারতবাসী লজ্জানত। তিনি ট্রাম্প আতঙ্কে ভুগছেন। গোপন কথাটি রয়না গোপনে। মোদীর সমর্থনেই ভারতের এই হেনস্তা ও অবমাননা। বিদেশমন্ত্রীও কার্যত হাতকড়া লাগাবার পক্ষে সাফাই গাইলেন অভিবাসী ফেরতের ‘অধিকার’কে সামনে রেখে। কিন্তু বিদেশ সচিবের মন্তব্যে বোঝা যায় এমন অপমান এড়ানো সম্ভব হতো, ভারত চাইলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিবাসী বিনিময়ে কূটনৈতিক সৌজন্যের অস্বাভাবিক অনুপস্থিতি ঘটছে এক্ষেত্রে। অভিবাসী ফেরতের এই ভয়ঙ্কর অভব্য ভঙ্গি রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদ বিরোধী। ভারত চাইলে রাষ্ট্রসঙ্ঘে আমেরিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে। মহামান্য বন্ধু চোখ বড় করে তাকালেই যার ৫৬ ইঞ্চি চুপসে যায়, হাঁটু কাঁপতে থাকে, যিনি একটা প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারেন না, তিনি করবেন অভিযোগ! অথচ তিনি নাকি ভারতের চৌকিদার, সে কি কেবল আদানির ব্যবসা আর সম্পদ রক্ষার? ভারতের সার্বভৌমত্ব, ভারতীয়দের সম্মান স্বদেশে বা বিদেশে, দেশের মর্যাদা রক্ষার চৌকিদার তবে কে? তার চৌকিদার দেশে দেশে ঐ কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোর মতো বামপন্থী, যিনি মার্কিন যুদ্ধ বিমানে আগত নিজের দেশের অভিবাসী নাগরিকদের ফেরত পাঠিয়ে, আবার দেশের বিমান পাঠিয়ে সসম্মানে দেশে ফিরিয়ে আনার হিম্মত রাখেন। এই বামপন্থীদের বুকের ছাতির মাপ নিতে কেউ সাহস করে না, কারণ ওরা প্রয়োজনে মরণসাগর সাঁতরে অন্ধকারকে হত্যা করে, ওদের ‘সকল দেহ সকল মনে জীবন জেগে ওঠে।’তাই এখন সমস্ত বামপন্থী দেশপ্রেমিক মানুষকে প্রস্তুত হতে হবে, সাম্রাজ্যবাদের ক্রীতদাস সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশের সার্বভৌমত্বকে নিরাপদ করার জন্য। আর আধিপত্যবাদীদের ‘গাজা দখল’ও অভিবাসীদের অপমানের চরম দম্ভের ঐ জিহ্বা ধুলায় এসে ছিঁড়ে পড়ে যায় যেন, আর সত্য হয়ে ওঠে কবির প্রত্যয়, তারই জন্যে, দানবের মৃঢ় অপব্যয় গ্রন্থিতে পারে না কভু ইতিবৃত্তে শাশ্বত অধ্যায়।


সূত্র: গণশক্তি

Tags: Narendra Modi
ShareTweet

Related Posts

শিক্ষায় বৈষম্য নিয়ে সরব রাহুল গান্ধী, পাল্টা আক্রমণ বিজেপির

‘আমি সরকারকে অনুরোধ করছি না, আমি তাদের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি’, পাকিস্তানী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি রাহুল গান্ধীর

June 4, 2025
0

গত শনিবার কাশ্মীরের পুঞ্জের পাকিস্তানি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করেছেন লোকসভার বিরোধী দল নেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী।...

বিজেপিরই বিধায়কের বিস্ফোরক অভিযোগ: “উত্তর প্রদেশ সরকারই সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত”

বিজেপিরই বিধায়কের বিস্ফোরক অভিযোগ: “উত্তর প্রদেশ সরকারই সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত”

March 22, 2025
0

উত্তর প্রদেশের যোগী সরকারকে সরাসরি দুর্নীতিগ্রস্ত আখ্যা দিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিজেপি বিধায়ক ও হিন্দুত্ববাদী নেতা নন্দকিশোর গুজ্জর। শুক্রবার গাজিয়াবাদে...

গণতন্ত্রের সংকট ও উত্তরণের পথ

গণতন্ত্রের সংকট ও উত্তরণের পথ

March 13, 2025
0

জানে আলম ভারত কি সত্যিই এগোচ্ছে, নাকি অন্ধকারের পথে হাঁটছে? একটি জাতির প্রকৃত উন্নতি নির্ভর করে তার সামাজিক ও রাজনৈতিক...

Recommended

স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলিমদের ভূমিকা নিয়ে বই

স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলিমদের ভূমিকা নিয়ে বই

5 months ago
আগামী ২ মে প্রকাশিত হবে মাধ্যমিকের ফলাফল

আগামী ২ মে প্রকাশিত হবে মাধ্যমিকের ফলাফল

2 months ago
Facebook Twitter Youtube
TDN Bangla

TDN Bangla is an Online bengali news portal, provides voice for poeple by sharing most authentic news in bengali.You can find out news like international, national, state, entertainment, literature etc at TDN Bangla.

Category

  • Uncategorized
  • আন্তর্জাতিক
  • খবর
  • খেলা
  • দেশ
  • ধর্ম ও দর্শন
  • প্রবন্ধ
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • রাজ্য
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়
  • সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • About Us
  • Privacy Policy
  • Contact Us

© 2024 TDN Bangla | developed with ♥ by GS Kitchen.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
No Result
View All Result
  • হোম
  • রাজ্য
  • দেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • সম্পাদকীয়

© 2024 TDN Bangla | developed with ♥ by GS Kitchen.

This website uses cookies. By continuing to use this website you are giving consent to cookies being used. Visit our Privacy and Cookie Policy.