আরব বিশ্বের প্রতিবাদ, ট্রাম্প কি গাজা দখলের পরিকল্পনা থেকে সরে আসছেন?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখল এবং ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তবে মিসর ও জর্ডান মনে করছে, তারা সফলভাবে ট্রাম্পকে এই পরিকল্পনা থেকে নিরস্ত করতে পেরেছে।
মিসর ও জর্ডানের কূটনৈতিক সাফল্য
মিসরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে জানান, তাঁরা ট্রাম্পের সামনে একটি বিকল্প পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন, যা তিনি সমর্থন করেছেন। জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহও ওয়াশিংটন সফরের সময় ট্রাম্পকে এই বিষয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, গাজা দখলের মতো পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে উগ্রপন্থাকে উসকে দিতে পারে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সরকারগুলো অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। ট্রাম্প মনোযোগসহকারে এই উদ্বেগ শুনেছেন বলে জানা গেছে।
যুদ্ধবিরতি ও গাজার পুনর্গঠন
ট্রাম্পের গাজা দখলের পরিকল্পনা থেকে সরে আসার প্রেক্ষাপটে মিসর গাজায় পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, হামাস ছয়জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে, বিনিময়ে ইসরায়েল গাজায় ভারী যন্ত্রপাতি প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। এ ছাড়া, ইসরায়েল গাজায় ভ্রাম্যমাণ বাড়ি প্রবেশেরও অনুমতি দিয়েছে, যা আগে নিষিদ্ধ ছিল।
গাজার ভবিষ্যৎ শাসন ব্যবস্থা
গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী শাসন কাঠামো নিয়ে আলোচনার জন্য মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি সৌদি আরব সফর করতে পারেন। মিসরের পরিকল্পনা অনুসারে, হামাস গাজার প্রশাসন থেকে দূরে থাকবে, তবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) শীর্ষ কোনো কর্মকর্তা এতে অন্তর্ভুক্ত হবেন না।
বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়ন
গাজা ও পশ্চিম তীরের পুনর্গঠনের জন্য জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ মূল্যায়নে বলা হয়েছে, এর জন্য প্রায় ৫,০০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হবে। প্রথম তিন বছরেই কমপক্ষে ২,০০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার তেমন কোনো আগ্রহ নেই। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামও ইসরায়েল সফরে গিয়ে বলেন, গাজা দখলের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তেমন আগ্রহ নেই।
মিসর ও জর্ডানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ট্রাম্প গাজা দখলের পরিকল্পনা থেকে অনেকটাই সরে এসেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে গাজার পুনর্গঠন ও যুদ্ধ-পরবর্তী শাসনব্যবস্থা। মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এই পরিবর্তন কতটা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।