গুজরাটে আয়োজিত কংগ্রেসের ৮৪তম জাতীয় সম্মেলনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ছিল বিতর্কিত ওয়াকফ আইন, ধর্মান্তর বিরোধী আইন, জাতিগত সহিংসতা, চীনের আগ্রাসন এবং মোদী সরকারের দুর্বল বিদেশনীতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা।
কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির (CWC) বৈঠকে বলা হয়, ধর্মান্তর বিরোধী আইন ও ওয়াকফ আইন বিজেপির একটি রাজনৈতিক কৌশল, যা সমাজে বিভাজন তৈরি করছে। এসব আইনকে “মেরুকরণমূলক কৌশল” বলে আখ্যা দিয়ে কংগ্রেস সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।
প্রস্তাবে চীনের দ্বারা পূর্ব লাদাখে প্রায় ২০০০ বর্গকিমি ভারতীয় ভূখণ্ড দখলের বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কংগ্রেসের মতে, সরকার এই ইস্যুতে নীরব থেকেছে এবং দেশের নিরাপত্তা নিয়ে আপোস করেছে।
আরেকটি প্রস্তাবে মোদী সরকারের বিদেশনীতি নিয়ে বলা হয়, এই নীতি “দুর্বল নেতৃত্ব ও অসহায় আত্মসমর্পণের” পরিচয় বহন করে, যা দেশের মর্যাদার পক্ষে বিপজ্জনক। কংগ্রেস স্পষ্টভাবে জানায়, এই ধরনের পররাষ্ট্রনীতি দেশের স্বার্থের পরিপন্থী এবং একে মেনে নেওয়া যায় না।
জাতিগত সহিংসতা নিয়ে গৃহীত আরেকটি প্রস্তাবে বলা হয়, দেশজুড়ে দলিত, আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের ওপর অত্যাচার উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। কংগ্রেস এই ধরনের নিপীড়নের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং দল হিসেবে সমাজে ন্যায় ও সাম্যের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই সম্মেলনে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন,
“বিজেপি দেশের সম্পদ দখল করে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ কায়েম করছে এবং সরকার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় রয়েছে।” তিনি সর্দার প্যাটেল ও পণ্ডিত নেহরুর সম্পর্ক প্রসঙ্গে বলেন, “বিজেপি ও আরএসএস তাদের সম্পর্ক নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু তারা ছিলেন এক মুদ্রার দুই পিঠ।”
রাজস্থানের কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ সিং দোতসরা বলেন,
“বিজেপি ঘৃণা ছড়িয়ে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে চায়। আমরা কংগ্রেসকে শক্তিশালী করব এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।”
এই সম্মেলন থেকে কংগ্রেস স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে—তারা ধর্মনিরপেক্ষতা, সামাজিক ন্যায় এবং দেশীয় স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে কোনওরকম আপোস করবে না।