মালদার গাজলের একুশ মাইল ঢাকনাপাড়ায় পিস একাডেমির উদ্যোগে শনিবার একটি ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। মাহফিলে প্রায় পাঁচশো রোজাদার অংশগ্রহণ করেন। ইফতারের আগে “আদর্শ সমাজ গঠনে মসজিদ কমিটির ভূমিকা” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বহু মসজিদ কমিটির সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আলেম মাওলানা আব্দুল ওদুদ সাহেব। তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “মদিনার মসজিদ ছিল সমাজ গঠনের কেন্দ্রবিন্দু। সেখান থেকে যেমন ন্যায়পরায়ণ ও আদর্শ নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে, তেমনি আমাদের মসজিদ থেকেও সত্যিকারের নেতৃত্ব উঠে আসা উচিত। মসজিদ কমিটির সদস্যদের উচিত সমাজ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।”
তিনি আরও বলেন, “একটি সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য আমাদের মসজিদ কমিটিগুলোকে শুধু প্রশাসনিক কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সমাজ সংস্কারের জন্য উদ্যোগী হতে হবে। মসজিদকে কেবল ইবাদতের জায়গা হিসেবে নয়, বরং সমাজ ও মানবতার কল্যাণে ব্যবহারের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”
ইফতারের পর মাওলানা আব্দুল ওদুদ সাহেব ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও ব্যক্তিত্বের উন্নয়নের জন্য রমজানের শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেবল পড়াশোনায় নয়, তাদের চারিত্রিক গুণাবলিকেও সমৃদ্ধ করতে হবে।” তিনি ছাত্রদের নৈতিকতা, সততা ও দায়িত্বশীলতার গুরুত্ব সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিশনের সম্পাদক ডাঃ মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, “একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়তে হলে আমাদের খায়রে উম্মাহর (উত্তম জাতি) ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের কাজের মধ্য দিয়েই সমাজে পরিবর্তন আসবে।”
এছাড়াও অনুষ্ঠানে পিস একাডেমির সভাপতি নূরুল ইসলাম মাজিদি, ডাইরেক্টর আখতার হোসেন সহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। তারা পিস একাডেমির কার্যক্রম ও সামাজিক উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে এমন অনুষ্ঠান আয়োজনের আহ্বান জানান।
এক রোজাদার টিডিএন বাংলাকে বলেন, পিস একাডেমির এই উদ্যোগ শুধু ইফতার মাহফিলে সীমাবদ্ধ ছিল না; এটি সামাজিক ও ধর্মীয় চেতনা জাগরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আদর্শ সমাজ গঠনে মসজিদ কমিটির ভূমিকা নিয়ে আলোচনা এবং শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা নিয়ে সংলাপ এই আয়োজনকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করেছে।
আরেকজন টিডিএন বাংলাকে বলেন, এই ধরনের ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা যদি নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে সমাজের মানুষ আরও বেশি নৈতিক ও আদর্শ জীবনযাপনের অনুপ্রেরণা পাবে।