পাঁশকুড়ার গোঁসাইবেড় বাজারে এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল রাজ্য। চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হল সপ্তম শ্রেণির ছাত্র কৃষ্ণেন্দু দাস। রবিবার দুপুরে বাজারে চিপস কিনতে গিয়েই ঘটে এই বেদনাদায়ক ঘটনা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারের এক দোকানে চিপস কিনতে গিয়েছিল কৃষ্ণেন্দু। কিন্তু দোকানটি বন্ধ ছিল, এবং দোকানদার শুভঙ্কর দীক্ষিতকে ডেকেও সাড়া না পেয়ে কৃষ্ণেন্দু দোকানের বাইরে পড়ে থাকা একটি চিপসের প্যাকেট তুলে নেয়। এরপর বাড়ি ফেরার পথে সিভিক ভলান্টিয়ার পেশার শুভঙ্কর দীক্ষিত মোটরবাইকে এসে তাকে ধাওয়া করে, এবং বাজারের মাঝে চুরির অপবাদ দিয়ে কৃষ্ণেন্দুকে কান ধরে উঠবস করান ও মারধর করেন বলে অভিযোগ। কৃষ্ণেন্দুর পরিবার দাবি করেছে, ঘটনাস্থলেই শিশুটি চিপসের দাম মিটিয়েছিল।
ঘটনার প্রাথমিক তথ্য পেয়ে কৃষ্ণেন্দুর মা ছুটে এসে ছেলেকে বকাঝকা করেন এবং বাড়ি নিয়ে যান। কিন্তু মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে, কৃষ্ণেন্দু একটি হৃদয়বিদারক সুইসাইড নোটে লিখে যায় – “মা, আমি চুরি করিনি।” এরপর বাড়িতে থাকা কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে তমলুক মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হলেও সোমবার সকালে মারা যায় সে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর গোটা এলাকায় শোকের ছায়া। কান্নায় ভেঙে পড়েছে কৃষ্ণেন্দুর পরিবার। এলাকার মানুষ অভিযুক্ত শুভঙ্কর দীক্ষিতের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তবে এখনো পর্যন্ত শুভঙ্করের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এমনকি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি।
প্রশ্ন উঠছে—আইন রক্ষার দায়িত্বে থাকা একজন ব্যক্তি কীভাবে নিজেই আইন নিজের হাতে তুলে নেন? এক শিশুর জীবনের মূল্য কি এতটাই কম?
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে এলাকাবাসী। এখন দেখার বিষয়, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কত দ্রুত এবং কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।